
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শনিবার জাতীয় সমাবেশে যাওয়া জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার এক বিএনপি নেতা। তিনি উপজেলা জামায়াত নেতাকর্মীদের তালিকা করারও নির্দেশ দিয়েছেন। তার এ বক্তব্য সংবলিত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই নেতার নাম মো. জজ মিয়া। তিনি কাপাসিয়া উপজেলার সনমানিয়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। তার বাড়ি সনমানিয়ার চন্ড্রালহাতা গ্রামে।
স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা বলেন, জজ মিয়া আসলে মৌসুমী নেতা। বর্তমানে তিনি খুব সক্রিয় ও অতি উৎসাহী। অথচ ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে বিভিন্ন অজুহাতে দলের গুরুত্বপূর্ণ সভা-সমাবেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখতেন। আওয়ামী লীগের পুরোটা সময় তিনি গা বাঁচিয়ে চলেছেন। পটপরিবর্তনের পর তিনি হঠাৎ করেই সক্রিয় হন এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে অতি বাড়াবাড়ি করছেন। এলাকার অনেকেই তার এমন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন। এসব ফ্যাসিবাদী বক্তব্য। তার এ সন্ত্রাসী আচরণে দলের অনেকেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
তারা আরো বলেন, এই হুমকিদাতাকে অবিলম্বে চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। সেই সঙ্গে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি শান্তিপ্রিয় কাপাসিয়াকে অশান্ত করার ষড়যন্ত্র করছেন।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সনমানিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তৌহিদুজ্জামান তপন বলেন, কাপাসিয়া বিএনপির রাজনীতি নিয়ে জনমনে নানা বিভ্রান্তি ছড়াতে সুপরিকল্পিতভাবে একটি চক্র গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে দলে ঘাপটি মেরে থাকা কিছু লোক সুযোগ বুঝে দলের বড় ক্ষতি করছে। তাদের চিহ্নিত করা খুবই জরুরি। দলের যে কেউ শিষ্টাচার বহির্ভুত বক্তব্য বা কর্মকাণ্ডে জড়ালে তাদের ব্যাপারে কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহ রিয়াজুল হান্নানের নির্দেশে তদন্ত করে যথাযথ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্প্রতি জজ মিয়া স্থানীয় রমিজ উদ্দিন মার্কেটে ৪ নং ওয়ার্ড বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের দলীয় কার্যালয়ে এই বক্তব্য দেন। এ নিয়ে জামায়াত নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা শেফাউল হক ও কাপাসিয়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা ফরহাদ হোসেন মোল্লা বলেন, রাজনীতি করা সকলের গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার। স্বৈরাচারী আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া হতো। কাপাসিয়াকে রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল করার হীন উদ্দেশ্যে এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া হয়েছে।
এ ধরনের ফ্যাসিবাদী বক্তব্য জুলাই বিপ্লবের স্পিরিটের পরিপন্থী। বিএনপির নেতৃবৃন্দকে লাগামহীন ও অগণতান্ত্রিক বক্তব্য থেকে বিরত থাকার আহবান জানান তিনি।