
সারাদেশ: চট্টগ্রামের ফিরিঙ্গিবাজার এলাকার বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক ঘরে পুড়ে গেছে। ঘরের সঙ্গে পুড়েছে তাদের সর্বস্ব। নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার থেকে শুরু করে দামি জিনিসপত্র সবকিছুই পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে। আগুনের ভয়াবহ তাণ্ডবে তারা মাথা গোজার ঠাঁই হারিয়েছেন। অসুস্থ মেয়ে অর্পিতা দাশের অপারেশনের টাকা জমাতে শুরু করেন চট্টগ্রাম বন্দর হাসপাতালে কর্মরত মা সুগন্ধা দাশ। ৫০ হাজার টাকা জমিয়ে যত্ন করে রেখেছিলেন বাসায়। অস্ত্রোপচারের অপেক্ষায় থাকা মেয়েকে কিছুদিন আগে ভর্তি করিয়েছেন হাসপাতালেও। কিন্তু তার আগেই আগুন কেড়ে নিয়েছে সুগন্ধার সব, মেয়ের অপারেশনের টাকাও। সেসব ভেবে কান্না থামছে না এই মধ্যবয়সী নারীর। পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া ঘরের সামনে বসে তিন বিলাপ করছিলেন, ‘আমি এখন কোথায় যাব, মেয়েকে কীভাবে অপারেশন করাব।’
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে সেবিকা বন্ধুর কাজ করেন সোহাগী দাশ। আগুন লাগার সময় ডিউটি ছিল আগ্রাবাদে। খবর পেয়ে দ্রুত চলে আসেন। ঘটনার সময়ে বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, আমার স্বামীও ঘরে ছিল না। ঘরে ছিল শুধু ছোট মেয়ে। আগুন দেখে মেয়ে দ্রুত বের হয়ে যায়। এত দ্রুত আগুন ছড়িয়েছে কিছুই বের করা যায়নি। ঘরে মেয়ের বিয়ের জন্য জমানো টাকার জন্য আক্ষেপ করত করতে সোহাগী বলেন, ছোট মেয়ের বিয়ের কথা চলছে। সব ঠিক থাকলে বৈশাখেই বিয়ে। খেয়ে না খেয়ে টাকা জমিয়ে মেয়ের বিয়ের জন্য ৬২ হাজার টাকা রেখেছিলাম। সাথে এক ভরি অলঙ্কারও বাসায় ছিল। আগুনে আমার সব শেষ।
শুধু সোনালী ও সুগন্ধা নয়, এভাবে নিঃস্ব হয়েছে শতাধিক পরিবার। যাদের সবাই নিম্ন আয়ের মানুষ। সোমবার (১৫ এপ্রিল) দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে বস্তিতে আগুন লাগার সংবাদ পান ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা। সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় আরও ছয়টি ইউনিট। ৯ ইউনিটের চেষ্টায় এক ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিস। নগরীর ফিরিঙ্গি বাজার মেরিনার্স রোডের সঙ্গে লাগোয়া টেকপাড়া বস্তি ও এয়াকুব নগর লইট্টা ঘাটা বস্তিতে লাগে এ আগুন। টেকপাড়া বস্তিতে জেলে সম্প্রদায়ের শতাধিক পরিবারের বসবাস। জেলে সম্প্রদায় হলেও তাদের অনেকেই বিভিন্ন পেশায় আছেন।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |