প্রচ্ছদ জাতীয় ইভিএম এমন একটা যন্ত্র, যা প্রধানমন্ত্রীকেও চেনে না

ইভিএম এমন একটা যন্ত্র, যা প্রধানমন্ত্রীকেও চেনে না

জাতীয়: নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, ‘যদি কেউ মনে করে থাকেন, আমার আত্মীয় আছে, এমপি–মন্ত্রী আমাকে পছন্দ করেন অথবা ইভিএমে আমার লোক আছে। তার সঙ্গে যদি আমি সম্পর্ক রাখি–দেখা করি, ওনি আমার ভোট পরিবর্তন করে দিতে পারবে। এটার কোনো সুযোগ নাই। ইভিএম এমন একটা যন্ত্র, যে কিনা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকেও চেনেন না।’

মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় অডিটোরিয়ামে হরিরামপুর ও সিংগাইর উপজেলার প্রার্থীদের সঙ্গে আজ শনিবার দুপুরে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর এসব কথা বলেন। এসময় জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. তরিকুল ইসলাম, পুলিশ সুপার সুজন সরকার ও জেলা নির্বাচন অফিসার আমিনুর রহমান মিঞাসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় ইসি মো. আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচন অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ হতে হবে। কেউ যেন অন্যায়ভাবে কোনো প্রার্থীকে প্রচারে বাধা দিতে না পারে বা ভোটারকে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে বাধার সম্মুখীন না হয় এবং কোনোরকম আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না হয়—নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকেই এই দুটি তথ্যই দেওয়া হয়েছে।’

ইসি মো. আলমগীর বলেন, ‘এবার একটি বড় রাজনৈতিক দল (আওয়ামী লীগ) দলীয় প্রতীক তুলে দিয়েছে এবং উন্মুক্ত করে দিয়েছে। এবার নির্বাচনে রাজনৈতিক ফ্লেভার নেই। তারপরও কেউ রাজনৈতিক কোনো দলের পক্ষ থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেন, তা অপশন রাখা হয়েছে। কেউ স্বাধীনভাবেও নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন, এতে তাঁর রাজনৈতিক পরিচয়ের প্রয়োজন নেই। এ ছাড়া কোনো রাজনৈতিক দল রাজনৈতিকভাবে প্রার্থী দিতে পারবেন।’

ইসি আলমগীর আরও বলেন, ‘ইভিএম মেশিন যে কোনো সময় ডিসফাংশন করতে পারে। মেশিন হয়তো সঠিকভাবে রান হচ্ছে না, স্লো হচ্ছে। এটা হতে পারে। কিন্তু মেশিনে এমন কোনো ত্রুটি নেই, যে ভোটের রেজাল্ট পরিবর্তন আসে। ভোটাররা যেখানে ভোট দিবে সেখানে থাকবে।’

এমপি-মন্ত্রী স্বজনদের প্রার্থী না হওয়ার বিষয়ে আলমগীর বলেন, ‘এটা তাদের (আওয়ামী লীগের) একটা দলীয় সিদ্ধান্ত। আরেকটা নির্বাচন কমিশনের আইন। একটা তাদের দলীয় সিদ্ধান্ত থাকতে পারে, এটা তাদের পলিসি থাকতে পারে। কিন্তু আমাদের নির্বাচনী আইনে যে কোনো ব্যক্তি, যদি তিনি ওই এলাকার ভোটার হন, যদি তিনি ঋণখেলাপী না হন, তার বিরুদ্ধে যদি কোনো ক্রিমিনাল মামলা না থাকে, তার যদি জেল না হয়, ওনি যদি নাগরিকত্ব না হারান, যদি তার বয়স আঠারো হয়ে থাকে, তাহলে সে নির্বাচন করতে পারবে। আমাদের আইনে এই ধরনের আত্মীয়ের কোনো সম্পর্ক নেই।’

বিএনপির উদ্দেশে ইসি আলমগীর বলেন, ‘অনেকে রাজনৈতিকভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও তাদের (বিএনপি) অনেক সর্মথক-প্রার্থী আনঅফিসিয়ালি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। সুতরাং এটা বলার সুযোগ নেই যে, নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না।’

ইসি আরও বলেন, ‘ইভিএম পদ্ধতিতে নির্বাচনের ক্ষেত্রে যেটা বলা হয়, একটা শঙ্কা থাকে। তবে এ পদ্ধতিতে নির্বাচন হলো ইনজেকশন বা টিকার মতো। টিকা দেওয়ার আগে অনেকে ভয় পান, কিন্তু টিকা দেওয়ার পর টেরও পান না। ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দেওয়া সহজ। ইভিএম পদ্ধতিতে সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ করা সম্ভব। এই পদ্ধতিতে ভোট ছিনতাই ও জাল ভোট দেওয়ার সুযোগ নেই। ইভিএম যন্ত্রে ভোটগ্রহণে ত্রুটি নয়, হয়তো ধীরগতি হতে পারে। তবে বিগত সময়ে এই পদ্ধতিতে প্রার্থীরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।’