
এক নারীকে সাত মাস একটি বাসায় আটকে রেখে ধর্ষণ ও নির্যাতন করছিলেন কণ্ঠশিল্পী মাঈনুল আহসান নোবেল। জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’ নম্বরে কল পেয়ে বাসাটি থেকে নারীকে উদ্ধার করা হয়। পরে নোবেলকেও গ্রেপ্তার করা হয়। পরে নোবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। নোবেলের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমকে এমনটিই জানিয়েছেন মরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুর রহমান।
এদিকে নোবেলকে গ্রেপ্তারের পর মুখ খুলেছেন তার প্রাক্তন স্ত্রী সালসাবিল। নিজের ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে জানিয়েছেন তিনি বর্তমানে দেশের বাইরে রয়েছেন।
ওই পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমি বর্তমানে বাংলাদেশের বাইরে অবস্থান করছি। কারও বিরুদ্ধে কোনো প্রকারের মামলা দায়ের করিনি।’
নোবেলের বিরুদ্ধে মামলা প্রসঙ্গে সন্দেহ প্রকাশ করে সালসাবিল বলেন, ‘নোবেলের সঙ্গে আমার অনেক দিন দেখা হয় না ঠিক, কিন্তু ফোনে কথা হয়। আর যে অভিযোগ শুনলাম, ‘সাত মাস ধরে নোবেল আটকে রেখে ধর্ষণ’- আসলে ওর সঙ্গে সাত মাস কারো পক্ষে থাকা সম্ভব এটা আমার বিশ্বাস হয় না। কারণ ও নেশাগ্রস্ত, তাহলে সে কিভাবে কাউকে আটকে রাখবে?’
নোবেল মাদকাসক্ত উল্লেখ করে সালসাবিল বলেন, ‘সে দীর্ঘদিন রিহ্যাবে ছিল। তারপর ছাড়া পেয়েছে। এরপর আমার সঙ্গে কথা হতো, কিন্তু ওর সঙ্গে যে কেউ থাকত সেটা আমি জানতাম না। যেহেতু মামলা হয়েছে, ধর্ষণের- এখন আদালতে প্রমাণ হবে সত্য-মিথ্যা, আমাকেও সেভাবে অপেক্ষা করতে হবে।’
এইদিকে, রাজধানীর ডেমরা থানায় ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের অভিযোগে কণ্ঠশিল্পী মাইনুল আহসান নোবেলকে (৩১) গ্রেপ্তার করেছে ডেমরা থানা পুলিশ।
সোমবার (১৯ মে) দিবাগত রাত ২টার দিকে ডেমরা থানাধীন স্টাফ কোয়ার্টার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান নিশ্চিত করেন।
ঘটনার বিষয়ে ডেমরা থানার ওসি মাহমুদুর রহমান জানান, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে একটি ফোন কল পেয়ে ডেমরার একটি বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান থেকে ওই তরুণীকে উদ্ধার করা হয়। অভিযানের সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান নোবেল। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রাত ২টার দিকে তাকে ডেমরা এলাকা থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়।
নোবেল এসব নির্যাতনের ভিডিও নিজের মোবাইল ফোনে ধারণ করে তরুণীকে ব্ল্যাকমেইল করে আসছিলেন বলেও জানান ওসি মাহমুদুর রহমান।
তিনি আরও জানান, সম্প্রতি একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দেখা যায়- নোবেল এক তরুণীকে চুল ধরে টেনেহিঁচড়ে সিঁড়ি দিয়ে নামিয়ে নিচ্ছেন। ভিডিওটি দেখে তরুণীর পরিবার তাকে শনাক্ত করেন এবং টাঙ্গাইল থেকে ঢাকায় এসে ৯৯৯-এ কল করেন।
পুলিশ জানায়, নোবেল সীমান্ত পেরিয়ে বিদেশে পালানোর পরিকল্পনা করছিলেন এবং এজন্য একটি মাইক্রোবাসও ভাড়া করেছিলেন। তবে পালানোর আগেই তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়।
নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, নারী নির্যাতন এবং পর্নোগ্রাফি আইনে আলাদা দুটি মামলা করা হয়েছে বলেও জানায় পুলিশ।