
রাজশাহী বিভাগের ৩৯ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের কেন্দ্রীয় দপ্তরে ডেকেছে বিএনপি। সেখানে জেলা ও আসনভিত্তিক সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের। বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান অফিসে প্রাথমিকভাবে তালিকাভুক্ত মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ডাকা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। প্রতিটি আসন থেকেই সীমিতসংখ্যক মনোনয়নপ্রত্যাশীকে ডাকা হয়েছে বলে দলীয় সূত্র জানায়। তবে এতদিন বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে গণসংযোগে থাকা অনেক মনোনয়নপ্রত্যাশী এই সাক্ষাৎকারের জন্য ডাক পাননি। তাদের মধ্যে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ। তবে তারা হাল ছেড়ে না দিয়ে কেন্দ্রে তদবির করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসন থেকে চেয়ারপারসনের দপ্তরে সাক্ষাৎকারে ডাক পেয়েছেন মনোনয়নপ্রত্যাশী মেজর জেনারেল (অব.) শরিফ উদ্দিন। তিনি রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। এছাড়া বিএনপির সরকারের সাবেক টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মরহুম ব্যারিস্টার আমিনুল হকের ভাই। একই আসন থেকে সাক্ষাৎকারে ডাক পেয়েছেন শিল্পপতি অ্যাডভোকেট সুলতানুল ইসলাম তারেক এবং সুপ্রিমকোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন। তারেক গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির সদস্য এবং জিয়া ফাউন্ডেশনের অন্যতম নেতা। অন্যদিকে ব্যারিস্টার মিলন সুপ্রিমকোর্ট জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক।
রাজশাহী-২ (মহানগর) আসন থেকে সাক্ষাৎকারে ডাক পেয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও রাজশাহী সিটির সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু। এছাড়া এই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ইশাও কেন্দ্রের ডাক পেয়েছেন বলে জানা গেছে। মিজানুর রহমান মিনু জানান, রাজশাহী বিভাগের ৩৯ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ডাকা হয়েছে চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে। বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট ইশা জানান, সোমবার বিকালে তাদের বিভাগীয় সহ-দপ্তর সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চন্দনের কাছ থেকে কার্ড সংগ্রহ করে গুলশান কার্যালয়ে উপস্থিত হতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জানা যায়, বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকতও একজন মনোনয়নপ্রত্যাশী। এই আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী আর কেউ ডাক পেয়েছেন কি না জানা যায়নি।
রাজশাহী-৩ (মোহনপুর-পবা) আসন থেকে ডাক পেয়েছেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন। তিনি ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নে এই আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এই আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী আর কেউ ডাক পেয়েছেন কি না জানা যায়নি।
রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসন থেকে ডাক পেয়েছেন বাগমারা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক কামাল হোসেন। এই আসনে বিএনপির এক ডজনের বেশি মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। এই আসন থেকে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডিএম জিয়াউর রহমানকেও ডাকা হয়েছে।
রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে সাক্ষাৎকারের জন্য ডাক পেয়েছেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক নেতা গোলাম মোস্তফা। তবে এলাকায় গণসংযোগে থাকা বিশিষ্ট শিল্পপতি আব্দুস সাত্তার ডাক পাননি বলে জানিয়েছেন। আব্দুস সাত্তার অভিযোগে বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে মাঠে আছেন। কিন্তু গত মাসেও একবার বিএনপির দপ্তরে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ডাকা হয়েছিল। তখনো তিনি ডাক পাননি। এবারও তাকে ডাকা হয়নি। এই আসনে আরও দুজনকে ডাকা হয়েছে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে রাজশাহী-৬ (চারঘাট-বাঘা) আসনে চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সাক্ষাৎকারে ডাক পেয়েছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ। এই আসন থেকে আরও ডাক পেয়েছেন রাজশাহী জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল। এ দুই মনোনয়নপ্রত্যাশী ডাক পাওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরের একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, উপরিউক্ত ৬ আসন ছাড়াও রাজশাহী বিভাগের অধিকাংশ আসনেই মনোনয়নপ্রত্যাশীর সংখ্যা অধিক। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সার্বিক বিবেচনা করে তাদের চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে ডেকেছেন কথা বলার জন্য। এক আসন থেকে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশীকে ডাকা হয়েছে। যারা ডাক পেয়েছেন, তারাই মনোনয়ন পাবেন-এমন নিশ্চয়তা নেই। দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব মনোনয়ন দেবেন।
সুত্রঃ যুগান্তর











































