প্রচ্ছদ আন্তর্জাতিক ২৮২ কিমি বেগে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘মেলিসা’, আঘাত হানতে পারে যেখানে

২৮২ কিমি বেগে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘মেলিসা’, আঘাত হানতে পারে যেখানে

ক্যারিবীয় সাগরে সৃষ্ট বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড় ‘হারিকেন মেলিসা’ দ্রুত শক্তি বাড়িয়ে এখন বিরল ক্যাটাগরি-৫ মাত্রার ঝড়ে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে এটি ঘণ্টায় প্রায় ২৮২ কিলোমিটার (১৭৫ মাইল) বেগে বয়ে যাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া বিভাগ ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) সতর্ক করেছে, ঝড়টি ‘বিধ্বংসী ও প্রাণঘাতী বায়ুপ্রবাহ, প্রবল বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাস’ নিয়ে ক্যারিবীয় দ্বীপদেশ জ্যামাইকায় আঘাত হানতে পারে।

ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৭৫ মাইল (২৮২ কিলোমিটার) বেগে বয়ে চলা মেলিসা বর্তমানে ক্যাটাগরি-৫ মাত্রার ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে-যা হারিকেনের সর্বোচ্চ ধাপ। ধারণা করা হচ্ছে, এটি মঙ্গলবার ভোরে জ্যামাইকার উপকূলে আঘাত হানবে। ইতোমধ্যে হাইতি ও ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রে চারজনের মৃত্যু হয়েছে এই ঝড়ে।

এনএইচসি বলছে, মেলিসার ধীরগতি এবং অত্যধিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের আশঙ্কা বাড়িয়েছে। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, সর্বোচ্চ বাতাসের বেগ ও নিম্নচাপের বিচারে মেলিসাই ২০২৫ সালের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়।

সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় (বাংলাদেশ সময় মধ্যরাত) প্রকাশিত সর্বশেষ সতর্কবার্তায় এনএইচসি জানায়, ‘জ্যামাইকায় সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকালে প্রাণঘাতী বাতাস, প্রবল বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।’

সংস্থাটি জানায়, ঝড়টি বর্তমানে রাজধানী কিংস্টনের দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রায় ২৩৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে এবং ঘণ্টায় মাত্র ৬ কিলোমিটার বেগে পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিমমুখে অগ্রসর হচ্ছে।

এনএইচসি’র উপপরিচালক জেমি রোম বলেন, ‘ঝড়টির ধীরগতি ও অতিবৃষ্টি জ্যামাইকার জন্য একটি ভয়াবহ দুর্যোগ বয়ে আনতে পারে।’

সংস্থাটি জানিয়েছে, আগামী চার দিনে দ্বীপটিতে ১০০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে।

সরকারি প্রস্তুতি ও সতর্কতা

জ্যামাইকার সরকার রাজধানী কিংস্টনসহ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকজন সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। পুরো দ্বীপকে ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল’ ঘোষণা করা হয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রী ডানা মরিস ডিকসন বলেন, ‘আমরা এর আগে এমন ঝড় দেখিনি। অক্টোবরজুড়ে বৃষ্টি হয়েছে, মাটি ইতোমধ্যেই ভেজা। এর মধ্যে আবার এত বৃষ্টি হলে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধস হবে।’

তিনি জানান, সরকার ৮৮১টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দিয়েছে, যা সবার জন্য উন্মুক্ত ও বিনামূল্যে।

প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হোলনেস দ্বীপজুড়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এক্স (আগের টুইটার)-এ তিনি লিখেছেন, ‘প্রতিটি জ্যামাইকানকে অনুরোধ করছি-প্রস্তুত থাকুন, ঘরে থাকুন, ও সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ মানুন। আমরা এই ঝড় পার হব এবং আরও শক্তভাবে ফিরে আসব।’

সরকার জানিয়েছে, নিম্নাঞ্চলের মানুষকে স্কুলবাসে করে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হচ্ছে। যানজট যেন না হয় সেজন্য টোল বুথগুলো খোলা রাখা হয়েছে।

সূত্র: বিবিসি