
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় সরকারি কম্বল বিতরণকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৩ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার জিউপাড়া ইউনিয়নের ধোপাপাড়া বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ধোপাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুকনাজ বেগম সরকারি বরাদ্দের মাত্র ১৮টি কম্বল বিতরণের দায়িত্ব পান। এলাকায় প্রকৃত দরিদ্র নিরূপণে তিনি স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আরজ আলীর সহযোগিতা নেন। ১৮টি কম্বল ৯টি পাড়ার জন্য বণ্টন করার কথা থাকলেও জিউপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য আনসার আলী ও তার সমর্থকরা বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ তোলেন। এই নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে দুই পক্ষ লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
আহতদের মধ্যে বর্তমানে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন জিউপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য আনসার আলী, তার ছেলে সৌমিক হাসান, দেলোয়ার হাসান ও সাব্বির হাসান। এ ছাড়া আনসার আলীর স্ত্রী শামীমা বেগম আহত হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন এবং হাসপাতালেই অবস্থান করছেন।
অন্য আহতদের মধ্যে রয়েছেন- ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য বেলাল হোসেন, এমরান আলী ও শামীম হোসেন; ওয়ার্ড কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক রনি ইসলাম ও বাবু; আনোয়ার, আকরাম এবং হান্নান।
এ ছাড়া আনসার আলীর স্ত্রী শামীমা বেগমসহ ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য বেলাল হোসেন, এমরান আলী, শামীম হোসেন, ওয়ার্ড কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক রনি ইসলামসহ অন্তত ৯ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আনসার আলী অভিযোগ করেন, “আরজ আলী একাই সব কম্বল নিয়ে যাচ্ছিলেন। এর প্রতিবাদ করায় আরজ ও তার অনুসারীরা আমার পরিবারের ওপর হামলা চালায়। আরজ আলী এর আগেও বিভিন্ন কার্ড বিতরণে অনিয়ম করেছেন।”
অন্যদিকে, ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আরজ আলী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি নিয়ম মেনেই সমন্বয়কদের মাধ্যমে কম্বল বুঝিয়ে দিচ্ছিলাম। কিন্তু ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জয়নাল আবেদীন ও আনসার আলীর ছেলেরা আমাকে বাজারে একা পেয়ে হামলা ও লাঞ্ছিত করে। পরে আমার অনুসারীরা এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।”
এদিকে প্রধান শিক্ষক ফারুকনাজ বেগম বলেন, “এলাকায় জনপ্রতিনিধি না থাকায় স্থানীয় নেতৃত্বের ওপর নির্ভর করতে হয়েছিল। সামান্য ১৮টি কম্বল নিয়ে এমন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের খবর শুনে আমি লজ্জিত।”
খবর পেয়ে পুঠিয়া থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদুল ইসলাম জানান, “ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”








































