
১৩ নভেম্বর ঢাকার কর্মসূচি সফল করতে নেতাকর্মীদের সুসংগঠিত করছিলেন রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের ফরিদপুর জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফারুক হোসেন ওরফে ‘বোম’ ফারুক (৭২)। আর এ কাজে তাকে টাকা দিয়ে সহযোগিতা করছিলেন সাবেক এমপি ও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নিক্সন চৌধুরী।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন— এমন দাবি করেছেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আব্দুল জলিল।
এর আগে, গতকাল সোমবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলী এলাকা থেকে এক নারীসহ ফারুক হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি শহরের হাবেলী গোপালপুর এলাকার বাসিন্দা মৃত মো. জাহিদ হোসেনের ছেলে। ফারুক হোসেন আগে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। তার বাম হাতের মধ্যমা আঙুল বোমা বিস্ফোরণে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় তিনি ‘বোম ফারুক’ নামে পরিচিত বলে জানা গেছে।
ফারুক হোসেন বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পদে ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক আমেরিকায় অবস্থান করছেন বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি ফারুক হোসেনকে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয় বলে তিনি নিজেই ফেসবুকে জানান।
৩ নভেম্বর নিজের ফেসবুক আইডি থেকে দেওয়া একটি পোস্টে ফারুক হোসেন নিজেকে ‘দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি’ পরিচয় দিয়ে লেখেন, ‘ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের অন্তর্গত সব থানা, পৌরসভা, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো আগামী ১৩ তারিখ ঢাকা যাওয়ার জন্য সকলে প্রস্তুত থাকুন। ১০-১১-১২ তারিখ স্ব স্ব এলাকায় অবস্থান করে মিছিল করুন। বজ্রকণ্ঠে আওয়াজ তুলুন— অবৈধ ট্রাইব্যুনাল মানি না মানবো না, শেখ হাসিনার কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে। অবৈধ, অগণতান্ত্রিক সরকারের পতন হোক, পতন হোক।’ এরপর সোমবার তাকে আটক করে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল বলেন, ‘কার্যক্রম নিষিদ্ধ ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. ফারুক হোসেন (৫৩) ও তার বাসা থেকে জেলা যুবমহিলা লীগের সদস্য নাসরিন আক্তারকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ফারুক হোসেনকে ১৩ নভেম্বরের কর্মসূচি সফল করতে সাবেক এমপি মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী ৫ লাখ টাকা দিয়েছেন। সেই টাকা থেকে ৪ লাখ টাকা এরই মধ্যে এক ব্যক্তিকে দিয়েছেন ফারুক হোসেন। কৌশলগত কারণে আমরা এই মুহূর্তে সেই ব্যক্তির নাম প্রকাশ করছি না।’
ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় ৪টি এবং ডিএমপি, ঢাকাতে ২টি মামলা রয়েছে। এছাড়া সন্ত্রাসবিরোধী আইনে কোতোয়ালি থানার এসআই আতিকুর রহমান বাদী হয়ে আরও একটি মামলা করেছেন। ওই মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলার রায় কবে হবে, তা জানা যাবে ১৩ নভেম্বর। গত ২৩ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার রায় কবে হবে, তা জানানোর তারিখ নির্ধারণ করেন।
সূত্র: কালবেলা










































