প্রচ্ছদ জাতীয় হাদি হত্যা, সামনে এলো শুটার ফয়সালের নতুন পরিচয়

হাদি হত্যা, সামনে এলো শুটার ফয়সালের নতুন পরিচয়

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া কয়েকটি ছবিতে দেখা যায়, একটি নাটকে অভিনয় করেছিলেন ফয়সাল। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০২২ সালে নির্মিত ‘কিলার’ শিরোনামের একটি নাটকে অভিনয় করেন তিনি।

এদিকে, ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদ ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব বিশ্লেষণ করে ১২৭ কোটি টাকার বেশি অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আবু তালেব। তিনি জানান, বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা থেকে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে এই অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ অনুযায়ী ফয়সাল করিম মাসুদসহ তার স্বার্থসংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অর্থপাচার সংক্রান্ত পৃথক অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে সিআইডি।

সিআইডি জানায়, ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান ওরফে রাহুল এখনও গ্রেপ্তার না হলেও মামলার আলামত গোপন ও তাকে পালাতে সহায়তার অভিযোগে তার পরিবারের সদস্যসহ একাধিক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযানের সময় বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই উদ্ধার করা হয়। যা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে চূড়ান্ত লেনদেন সম্পন্ন না হওয়া এসব চেকের মোট মূল্য প্রায় ২১৮ কোটি টাকা।

প্রাথমিক বিশ্লেষণে আরও দেখা যায়, অভিযুক্ত ও তার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ১২৭ কোটি টাকার বেশি সন্দেহজনক লেনদেন সংঘটিত হয়েছে। যা মানিলন্ডারিং, সংঘবদ্ধ অপরাধ এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রমে অর্থায়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারে।

অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার আবু তালেব জানান, অভিযুক্তদের ব্যাংক হিসাবে থাকা প্রায় ৬৫ লাখ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার জন্য আইনগত প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি এসব অর্থের উৎস ও সরবরাহকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান শনাক্তে সিআইডির একাধিক টিম কাজ করছে।

হত্যাকাণ্ডের পেছনে পরিকল্পনা, অর্থায়ন ও অস্ত্র সরবরাহে কোনো সংঘবদ্ধ ও শক্তিশালী নেটওয়ার্ক সক্রিয় ছিল কি না তা খতিয়ে দেখছে সিআইডি।

উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন শরিফ ওসমান হাদি। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয় তাকে। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর তার মৃত্যু হয়।

পরে মরদেহ দেশে এনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে তাকে দাফন করা হয়।