প্রচ্ছদ জাতীয় হঠাৎ করে দেশের মানুষের উদ্দেশ্য যে বার্তা দিলেন সেনাপ্রধান

হঠাৎ করে দেশের মানুষের উদ্দেশ্য যে বার্তা দিলেন সেনাপ্রধান

জাতীয় নির্বাচন আসন্ন। আর পাঁচ মাস পরেই রোজার আগে এ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ও নির্বাচন কমিশন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এই সময়ের মধ্যে এ মাসের শেষ দিকেই শুরু হতে যাচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য বড় উৎসব দুর্গাপূজা। নির্বাচন ঘিরে নানা ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

কয়েক দিন আগেই ঘটে গেছে জাতীয় পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা। গণঅধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নুর ওই ঘটনায় গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

বিষয়টি ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন কেউ কেউ। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার থেকে বলা হয়েছে, ‘আমরা শক্তভাবে বলছি, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

কোনো শক্তি নেই এটা প্রতিহত করার।’ সেনাবাহিনীর পক্ষে আইএসপিআর থেকে বলা হয়েছে, “সব ধরনের মব সহিংসতার বিরুদ্ধে সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সরকারের এই সিদ্ধান্ত পুনর্ব্যক্ত করছে এবং জনমনে স্বস্তি ও নিরাপত্তা আনয়নে সব ধরনের মব সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করতে সব সময় প্রস্তুত রয়েছে। জননিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা ও শান্তি বজায় রাখতে সেনাবাহিনী সর্বদা বদ্ধপরিকর।

” এ ছাড়া ওই সংঘর্ষ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘উদ্ভূত ঘটনায় সেনাবাহিনীর পাঁচ সদস্যও আহত হয়েছেন।’

সার্বিক এই পরিস্থিতির মধ্যে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান গতকাল সোমবার আবারও এই আশ্বাস ব্যক্ত করেছেন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নসহ জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। তিনি গতকাল রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে পৃথক সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এই আশ্বাস ব্যক্ত করেন।

সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ষড়যন্ত্রকারীরা যতই অপপ্রচার চালাক, সোনাবাহিনী তথা সশস্ত্র বাহিনীকে মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনগণের যে প্রত্যাশা সেটি পূরণ করার লক্ষ্যে বাহিনীকে অবশ্যই দৃঢ়তা প্রদর্শন করতে হবে। সাধারণ জনগণ সশস্ত্র বাহিনীর আমানত।

এই সংকটের সময় জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সশস্ত্র বাহিনীর পবিত্রতম দায়িত্ব। সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধানকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ ও কটূক্তি করা ষড়যন্ত্রেরই অংশ বলে মনে হয়। এর প্রতিরোধে অন্তর্বর্তী সরকারকেও প্রকৃত নেতৃত্বের জায়গায় থেকে সংশ্লিষ্ট পক্ষকে কঠোরভাবে বলতে হবে, ‘ডোন্ট ডু দিস’। এটা বন্ধ করো।
বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের আস্থায় সেনাবাহিনী : দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষও বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সশস্ত্র বাহিনীকে নিজেদের ভরসার স্থল হিসেবেই আস্থায় রাখছে।

সেনাপ্রধানও বলে আসছেন, ‘এই বাংলাদেশে শত শত বছর ধরে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, পাহাড়ি, বাঙালি, উপজাতি সবাই মিলে অত্যন্ত শান্তিতে, সম্প্রীতিতে আমরা বসবাস করে যাচ্ছি। এই দেশ সবার। সবাই একসঙ্গে এই দেশে সুন্দরভাবে ও শান্তিতে বসবাস করব। এখানে কোনো জাতি-ধর্ম, গোত্রের মধ্যে ভেদাভেদ থাকবে না। সবাই আমরা এ দেশের নাগরিক। প্রতিটি ক্ষেত্রে সবার সমান অধিকার রয়েছে। সেভাবেই আমরা আমাদের সামনের সোনালি দিনগুলো দেখতে চাই।’

গত ১৬ আগস্ট রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে জন্মাষ্টমীর মিছিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁনও উপস্থিত ছিলেন।

গত ১৩ এপ্রিল রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে ‘সম্প্রীতি ভবন’-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান বলেন, ‘দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে সেনাবাহিনী যা করার সব করতে প্রস্তুত। আমরা হানাহানি, বিদ্বেষ চাই না। বিভিন্ন মত থাকতে পারে, কিন্তু অবশেষে আমরা সবাই সবাইকে যেন শ্রদ্ধা করি। একে অপরের বক্তব্য, মতামতকে যেন শ্রদ্ধা করি। আমরা শান্তির দেশ চাই, শৃঙ্খলার দেশ চাই।’

গত বছর ২৪ ডিসেম্বর খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের শুভ বড়দিন ও নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে ঢাকার কাকরাইলে আর্চ বিশপের হাউস পরিদর্শনকালে সেনাপ্রধান বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের দেশের গর্ব। সব সম্প্রদায়ের ব্যক্তিবর্গ যেন নিজ নিজ ধর্মীয় উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে উদযাপন করতে পারে, সে বিষয়ে অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।

সেনাপ্রধান নৌ ও বিমানবাহিনী প্রধানদের সঙ্গে গত বছর ১১ অক্টোবর দুর্গাপূজা উপলক্ষে রমনা কালীমন্দির পরিদর্শন করেন। তিনি সেদিন বলেন, ‘সেনাবাহিনী দেশব্যাপী পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব সময় প্রস্তুত ও তৎপর রয়েছে। আমাদের লক্ষ্য, দেশের প্রত্যেক নাগরিকের জন্য নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষ যেন উৎসবমুখর পরিবেশে তাদের ধর্মীয় উৎসব পালন করতে পারে, সেটিই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। আমরা অতীতের মতোই সব ধর্মের মানুষের মধ্যে সহযোগিতা ও সম্প্রীতি বজায় রাখব এবং দেশের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করব।’

সেনাপ্রধানের ওই সব বক্তব্য এবারও স্মরণ করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর সেনাপ্রধানের এই অবস্থান সম্পর্কে গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এটি অবশ্যই ইতিবাচক। সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর প্রধানদের উপস্থিতি আমাদের মনোবল বাড়িয়েছে। আমরা আশা করছি এবারের দুর্গাপূজায়ও তাঁরা আসবেন।’

সামরিক বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন : ফাউন্ডেশন ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জায়েদুর রহমানের (অব.) মতে, ‘মব সহিংসতা’ জুলাই অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের জনজীবনে নতুন একটি আতঙ্ক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এটি এখনো চলমান। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রতিবেদন অনুসারে, গত জানুয়ারি থেকে আগস্টের মধ্যে মব সহিংসতায় ১১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সংখ্যাটি পূর্ববর্তী বছরগুলোর চেতেয় অনেক গুণ বেশি। স্বাভাবিকভাবেই এই সহিংসতা সুস্থ সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়। মব সহিংসতা পাঁচটি মূল বিষয়কে ঘিরে সংঘটিত হয়ে থাকে—রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব, সামাজিক প্রতিপত্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা, অর্থনৈতিক ও ব্যাবসায়িক ফায়দা, ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি এবং ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য। স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী বা ব্যক্তি মব সহিংসতা ঘটানোর ক্ষেত্রে দুটি মাধ্যম অবলম্বন করে। এক. তাৎক্ষণিক জনরোষ তৈরি করা, দুই. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব, মিথ্যা এবং অসত্য তথ্য ছড়ানো।

বাংলাদেশ বর্তমানে একটি বিশেষ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর আইন-শৃঙ্খলার দৃষ্টিকোণ থেকে দেশ এখনো নাজুক অবস্থায় আছে। পুলিশ এখনো সম্পূর্ণ কার্যক্ষমতা নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় অপারগ। এর পেছনে জনগণ ও পুলিশের মাঝে পারস্পরিক আস্থা ও অনাস্থার বিষয়টি যেমন আছে, তেমনই পুলিশের আত্মবিশ্বাসের ঘাটতির বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে মব সহিংসতার মতো ঘৃণ্য কাজটি ঘটানো হয়ে থাকে। সশস্ত্র বাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োগ করা হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে জনমনে আশা সঞ্চারিত হয় যে মব সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে আসবে। কিন্তু আসলেই কি সেই আশাটি পূরণ হয়েছে? বারবার সরকারপ্রধান এবং সেনাপ্রধান মব সহিংসতা দৃঢ় হস্তে দমনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তারপরও কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাচ্ছে না। এটি কি সশস্ত্র বাহিনীর ব্যর্থতা? না কি এর পেছনে আরো অন্য কোনো কারণ আছে?

তিনি বলেন, ‘সশস্ত্র বাহিনীর মনোবল, প্রশিক্ষণ এবং দেশপ্রেমের দৃষ্টিকোণ থেকে এই কাজে ব্যর্থতার কোনো সুযোগ নেই। কাঙ্ক্ষিত ফল না পাওয়া যাওয়ার পেছনে যে কারণগুলো আছে বলে ধারণা করা হয়, সেগুলো হচ্ছে—প্রথমত, সশস্ত্র বাহিনী যখনই কঠোর হস্তে কোনো মব সহিংসতা দমন বা নিয়ন্ত্রণে ব্যপৃত হয়েছে, তখনই কোনো কোনো মিডিয়া প্রয়োজনাতিরিক্ত বল প্রয়োগ হচ্ছে কিংবা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বল প্রয়োগ হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খণ্ডিত ভিডিও কিংবা স্থিরচিত্র সশস্ত্র বাহিনীকে অপবাদ দেওয়ার জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে ছড়ানো হয়। এতে বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালনে অনুৎসাহী হন অথবা দৃঢ়তা প্রদর্শন করেন না। দ্বিতীয়ত, পুলিশ বা অন্যান্য সহায়ক বাহিনীগুলো সশস্ত্র বাহিনীকে সম্পূর্ণ তথ্যসহ অন্যান্য সহযোগিতা করা থেকে বিরত বা নির্লিপ্ত থাকছে। তৃতীয়ত, সশস্ত্র বাহিনী দীর্ঘকালের জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালনের জন্য অভ্যস্ত নয়। সার্বিকভাবে মব সহিংসতাকে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এই প্রেক্ষাপটে সশস্ত্র বাহিনীর কাছে জনগণের যে প্রত্যাশা সেটি পূরণ করার লক্ষ্যে বাহিনীকে অবশ্যই দৃঢ়তা প্রদর্শন করতে হবে। জনগণ ও সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করতে হবে, যাতে বিভ্রান্তি না ছড়াতে পারে। প্রয়োজনে এই যোগাযোগটি স্থানীয় পর্যায়েও নিয়মিত হতে পারে। পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় আরো বাড়ানো প্রয়োজন। সাধারণ জনগণ সশস্ত্র বাহিনীর আমানত। এই সংকটের সময় জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সশস্ত্র বাহিনীর পবিত্রতম দায়িত্ব।

নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ মেজর জেনারেল (অব.) ড. মো. নাঈম আশফাক চৌধূরী মনে করেন, নির্বাচনের সময় ও রোডম্যাপ ঘোষণার পর দেশের অস্থিতিশীলতা বহাল রাখতে নানা পক্ষ তৎপর হয়ে উঠেছে।

নাঈম আশফাক চৌধূরী গতকাল সোমবার কালের কণ্ঠকে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সময় ও তার পরে আইনের শাসন মানতে চায় না এমন পক্ষের সংখ্যা কম ছিল। কিন্তু এখন অনেক পক্ষ চলে আসছে। সামনের পরিস্থিত আরো খারাপ হওয়ার আশঙ্কা আছে। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে যে শাসক দলের পতন ঘটে তারাও চাইবে দেশে যেন একটা সফল নির্বাচন না হয়। যে ‘র’ বাংলাদেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকেছিল, তারাও চেষ্টা করবে তাদের আগের আধিপত্য ফিরে পেতে। এটি সম্ভব হবে যদি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়। যে দল নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসবে, তাদের বিরুদ্ধে মাঠে নামানো হবে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারকে। পরিস্থিতি অবনতির জন্য অনেক ধরনের ষড়যন্ত্র শুরু হয়ে গেছে। এই অবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত যত সিকিউরিটি ফোর্স আছে তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের সহায়তা কাজে লাগিয়ে ওই সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা। শুধু আর্মি, পুলিশ, বিজিবি, আনসারের ওপর নির্ভর করা হবে ভুল কৌশল।

সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধানকে গালাগালি করার বিষয়ে নাঈম আশফাক চৌধূরী বলেন, “ষড়যন্ত্রকারীরা চায় না আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হোক। তারা চায় না আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত বাহিনীগুলোর সদস্যদের মনোবল অটুট থাকুক, তাদের মধ্যে ঐক্য থাকুক। এ জন্য তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধানকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ ও কটূক্তি করা—ওই ষড়যন্ত্রেরই অংশ বলে মনে হয়। এর প্রতিরোধে অন্তর্বর্তী সরকারকেও প্রকৃত নেতৃত্বের জায়গায় থেকে সংশ্লিষ্ট পক্ষকে কঠোরভাবে বলতে হবে, ‘ডোন্ট ডু দিস’। আমাদের দেশের জনসাধারণ ১৯৭০ সালের পর ২০২৪ সালে যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, সম্ভাবনার সুযোগ তৈরি করেছিল, তা কাজে লাগানো যায়নি বলেই মনে হয়। গালাগালির মাধ্যমে এখন বিভাজনের সংস্কৃতির দিকে যাচ্ছি। এই বিভাজন দূর করে অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতির দিকে যেতে হবে। আমাদের বুঝতে হবে, কে এবং কারা দেশের জন্য কাজ করছে। এর জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকেই দায়িত্ব নিতে হবে।”

তিনি আরো বলেন, ‘পরিবর্তিত বিশ্ব রাজনীতি আমাদের দক্ষিণ এশিয়ায় যে প্রভাব ফেলেছে, তাতে আমাদের জন্য অনেক ধরনের অপরচুনিটি (সুযোগ) তৈরি হয়েছে। আমরা যদি এই পরিস্থিতির যথাযথভাবে কাজে লাগাতে না পারি তাহলে পিছিয়ে পড়ব। এই অপরচুনিটি তখনই কাজে লাগাতে পারব, যখন দেশে একটা স্থিতিশীল পরিস্থিতি আসবে। কিন্তু নিজেরাই যদি অভ্যন্তরীণ অস্থিতিশীলতা থেকে বের হতে না পারি, তাহলে জাতির জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।