
জিম্বাবুয়ের নাগরিকদের জন্য সব ধরনের নিয়মিত ভিসা আবেদনে স্থগিতাদেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের উদ্ধৃতি দিয়ে আলজাজিরা শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বৃহস্পতিবার ওই বিবৃতিতে জানায়, তারা জিম্বাবুয়ে সরকারের সঙ্গে কিছু বিষয়ে উদ্বেগ দূর করার কাজ চালাচ্ছে। সে কারণে শুক্রবার থেকে জিম্বাবুয়েতে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস রুটিন ভিসা কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করবে।
এই পদক্ষেপকে সাময়িক বলে উল্লেখ করে দূতাবাস জানিয়েছে, এটি ভিসার নির্ধারিত সময়ের বেশি থাকা (ওভারস্টে) ও অপব্যবহার রোধে ট্রাম্প প্রশাসনের একটি অংশমাত্র। তবে বেশির ভাগ কূটনৈতিক ও সরকারি ভিসা এই স্থগিতাদেশের আওতায় পড়বে না বলে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে।
আলজাজিরার তথ্যমতে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসনসংক্রান্ত কঠোর নীতিমালার অংশ হিসেবে আফ্রিকার একাধিক দেশের নাগরিকদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণে নতুন বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। চলতি বছরের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্র ১২টি দেশের নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেয়, যার মধ্যে সাতটি দেশ আফ্রিকায় অবস্থিত।
এ ছাড়া আরো সাতটি দেশের ওপর বিধি-নিষেধ বাড়ানো হয়, যার মধ্যে তিনটিই আফ্রিকার দেশ। যুক্তরাষ্ট্র আরো জানিয়েছে, ৩৬টি দেশকে তারা নির্দেশ দিয়েছে নিজেদের নাগরিকদের যাচাই-বাছাই পদ্ধতি উন্নত করতে হবে, অন্যথায় সে দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। এই ৩৬টি দেশের বেশির ভাগই আফ্রিকার।
জিম্বাবুয়ে, মালাউই ও জাম্বিয়া এই তালিকায় রয়েছে, যাদের বলা হয়েছে, তাদের নাগরিকদের ভ্রমণসংক্রান্ত নথিপত্র উন্নত করতে এবং যারা অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছে, তাদের বিষয়েও ব্যবস্থা নিতে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বৃহস্পতিবার আরো জানায়, ‘ভিসাপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা ও জননিরাপত্তার মান বজায় রেখে ট্রাম্প প্রশাসন আমাদের দেশ ও জনগণকে সুরক্ষা দিচ্ছে।’
এই ঘোষণা এমন এক সময় এলো, যখন যুক্তরাষ্ট্র আফ্রিকার আরো দুটি দেশের নাগরিকের জন্য একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্প চালু করেছে, যেখানে মালাউই ও জাম্বিয়ার নাগরিকদের পর্যটক বা ব্যবসায়িক ভিসার জন্য সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ডলার বন্ড জমা দিতে হবে। এই বন্ড জমা দেওয়ার পরও যদি আবেদনকারী নির্ধারিত সময় শেষে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ না করে, তাহলে তাদের বন্ড বাজেয়াপ্ত করা হবে।
মঙ্গলবার ঘোষিত এই নতুন বন্ড নীতিমালায় বলা হয়েছে, মালাউই ও জাম্বিয়ার নাগরিকরা যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটক বা ব্যবসায়িক ভিসার আবেদন করার সময় পাঁচ হাজার, ১০ হাজার বা ১৫ হাজার ডলারের বন্ড জমা দেবেন।
এই প্রকল্প অনুযায়ী, তাদের অবশ্যই তিনটি নির্দিষ্ট বিমানবন্দর—বোস্টনের লোগান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অথবা ওয়াশিংটন ডিসির কাছে ডালেস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের যেকোনো একটি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ ও দেশত্যাগ করতে হবে।
এই ভিসা বন্ড পরীক্ষামূলক প্রকল্প ২০ আগস্ট থেকে শুরু হবে বলে পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে।