অপরাধ: দেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তাদের দুর্নীতি-অনিয়মের সংবাদ প্রকাশ হলেই একটি চক্র তাদের টার্গেট করতো। এরপর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট থেকে ফোন নম্বরসহ বিস্তারিত তথ্য নিয়ে প্রথমে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ জমা হয়েছে এমন তথ্য জানিয়ে নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখাতো। এর কিছু দিন পর দুদকের সহকারী পরিচালক পরিচয়ে ফোন করে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার কথা বলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিতো। এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিল চক্রটি।
চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতারের দাবি করে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি জানান, সম্প্রতি দুদক কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণার ঘটনায় দুদক বাদী হয়ে ডিএমপির রমনা থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। মামলায় কয়েকটি মোবাইল নম্বর উল্লেখ করা হয়। এরই সূত্র ধরে তদন্তে নেমে রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) লালবাগ বিভাগ।
গ্রেফতাররা হলো- চক্রের মূলহোতা ফিরোজ খান (৫২) তার শ্যালক মো. হাসান মুন্না (২৮) ও মুন্নার শ্যালক মো. রিয়াজ (১৮)। তাদের সবার বাড়ি মুন্সীগঞ্জ জেলায়। ডিবি বলছে, শ্যালক-দুলাভাইসহ পারিবারিক এই প্রতারক চক্রটি কখনও সাংবাদিক আবার কখনও দুদক কর্মকর্তা সাজে। এই পরিচয়ের জন্য তারা বিভিন্ন পত্রিকা, টেলিভিশনের সাংবাদিকদের পরিচয়পত্র ও ভিজিটিং কার্ড এবং দুদক কর্মকর্তাদের পরিচয়পত্র ব্যবহার করতো। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ পরিচয়পত্র, ভিজিটিং কার্ড, বিভিন্ন মডেলের ১১টি মোবাইল ফোন, বিভিন্ন অপারেটরের ২৯টি সিম কার্ড ও দুদক কর্মকর্তার ভুয়া পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়।
সোমবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের হারুন অর রশীদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্রটি কাজ করছে। উপজেলা চেয়ারম্যান, মেয়র, ওয়ার্ড কমিশনারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির নিউজ হলে সে নিউজের ডিটেলস জেনে নেয় তারা। পরে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম ও মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে সাংবাদিক পরিচয়ে নিউজের বিষয়ে জানিয়ে সমাধান করে দেওয়ার কথা বলে নানাভাবে আলোচনা করে। এরপর দুদক কর্মকর্তা পরিচয়ে ফোন দিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন পরিবর্তনের কথা বলে মোবাইল ব্যাংকিয়ের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলো। তাদের ব্যবহার করা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নম্বরগুলো বেনামে রেজিস্ট্রেশন করা।
এই চক্রটির বিরুদ্ধে একই অপরাধে একাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেফতাররা চার দিনের রিমান্ডে রয়েছে। তাদের প্রতারণার বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলেও জানান ডিবির এই কর্মকর্তা।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |