প্রচ্ছদ জাতীয় বিএনপি থেকে মনোনয়ন চান পুতুল

বিএনপি থেকে মনোনয়ন চান পুতুল

নাটোর-১ আসনে বিএনপি ও জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রচারণায় ব্যস্ত। প্রায় প্রতিদিনই তারা নির্বাচনি এলাকার কোনো না কোনো ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে সভা-সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন। যাচ্ছেন দলীয় নেতাকর্মীদের পারিবারিক নানা অনুষ্ঠানেও। পাশাপাশি ইসলামি জলসাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানেও যোগ দিচ্ছেন। এদিকে গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে সারা দেশের মতো এখানেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এলাকাছাড়া। জাতীয় পার্টিরও তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।

জেলার লালপুর ও বাগাতিপাড়া উপজেলা নিয়ে গঠিত নাটোর-১ আসন। মোট ভোটার তিন লাখ ৪৯ হাজার ৩৬৯ জন। এখানে বরাবরই আওয়ামী লীগের চেয়ে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী বেশি শক্তিশালী। এই আসন থেকে বারবার নির্বাচিত জেলার প্রথম প্রতিমন্ত্রী বিএনপি নেতা ফজলুর রহমান পটল মারা যাওয়ায় ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পান পটলের সহধর্মিণী অধ্যক্ষ কামরুন নাহার শিরিন। তবে বয়স বিবেচনায় তিনি আর প্রার্থী হতে চান না। এবার তার মেয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্রবিষয়ক পরামর্শক কমিটির বিশেষ সহকারী, বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য ও নাটোর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুলের জন্য দলীয় মনোনয়ন চাইবেন।

লালপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সিদ্দিকুর রহমান মিষ্টু ও গোপালপুর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক মেয়র নজরুল ইসলাম মোলাম যুগান্তরকে বলেছেন, ফারজানা শারমিন পুতুল তরুণ, পরিশ্রমী ও চৌকশ নেত্রী। তাকে মনোনয়ন দিলে শত প্রতিকূলতায়ও দলের বিজয় নিশ্চিত হবে। তবে লালপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক পটলের ছেলে ডা. ইয়াসির আরাফাত রাজন দীর্ঘদিন চুপচাপ থাকলেও সম্প্রতি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনিও দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুল যুগান্তরকে বলেন, প্রার্থিতার বিষয়ে দল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। দল যাকে মনোনয়ন দেবে সবাই তার পক্ষে কাজ করবে। সবাই মিলেমিশে বিএনপির জন্য লড়বে।

এদিকে আওয়ামী লীগের শেষ সময়ে বাগাতিপাড়া পৌরসভা নির্বাচনে বিজয়ী মেয়র বিএনপি নেতা অধ্যক্ষ একেএম শরিফুল ইসলাম লেলিন জানান, তারা আশা করেন এবার দলের ত্যাগী নেতা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহদপ্তর সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালনকারী তাইফুল ইসলাম টিপুকে দল এবার মনোনয়ন দেবে। দলের জন্য টিপুর অনেক অবদান রয়েছে। তিনি দলের দায়িত্বপালন করতে গিয়ে অনেক জেলজুলুমের শিকার হয়েছেন। এবার দল তাকে মনোনয়ন দিলে এই আসনে বিএনপির বিজয় শতভাগ নিশ্চিত। টিপুও এলাকায় এসে সভা-সমাবেশের মাধ্যমে সাধারণ নেতাকর্মীদের তার পক্ষে মাঠে সক্রিয় করে তুলছেন।

লালপুরের গোপালপুর পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম রানা ও লালপুর থানা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ সরকার বলেন, টিপু দলের জন্য অনেক অত্যাচার-নির্যাতন সয়েও আওয়ামী লীগের পুরো সময় মাঠে-ময়দানে সক্রিয় থেকেছেন। তাই তাকেই দলের মনোনয়ন দেওয়া উচিত।

জামায়াতে ইসলামী থেকে এখানে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে দলের উপজেলা আমির ও লালপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদকে। তিনি নির্বাচনি এলাকার প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় সভা-সমাবেশ করে প্রচারণা চালাচ্ছেন। বিজয়ী হলে এলাকার কোনো মানুষ আর বঞ্চিত বা বৈষম্যের শিকার হবেন না বলে প্রচার করছেন। ইতোমধ্যে তিনি জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খানকে এলাকায় এনে একাধিক সভা-সমাবেশ করে নেতাকর্মীদের মাঠে সক্রিয় করেছেন।

এদিকে বিএনপি-জামায়াতের বাইরে এই আসনে এখনো কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থীকে প্রকাশ্যে মাঠে দেখা যাচ্ছে না। জাতীয় পার্টির নেতা শিল্পপতি আবু তালহা এখানে একবার বিজয়ী হলেও এখন তার কোনো তৎপরতা নেই। তবে গত নির্বাচনে এখানে তাকে বাদ দিয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী করা হয় ব্যারিস্টার আশিকুর রহমানকে। এবি পার্টি থেকে এখানে প্রার্থী হিসাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন দলের জেলা সদস্য সচিব এএসএম মোকাররেবুর রহমান নাসিম।