প্রচ্ছদ প্রবাসী সংবাদ দ্বিতীয় বিয়েই কাল হলো আমেরিকা প্রবাসীর

দ্বিতীয় বিয়েই কাল হলো আমেরিকা প্রবাসীর

দ্বিতীয় বিয়ে, অতঃপর পাল্টাপাল্টি মামলাই কাল হলো আব্দুল হালিম জীবন (৪৮) নামের এক আমেরিকা প্রবাসীর। এতে তাকে লাশ হতে হয়েছে। গত ৩১ মার্চ ভোররাতে শেরপুর সদর উপজেলার চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের চুনিয়ারচর এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার হওয়ার পর পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে এ হত্যাকাণ্ডের চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

সোমবার (১ এপ্রিল) দুপুরে শেরপুরের পুলিশ সুপার মোনালিশা বেগম সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এ সময় মামলার তদন্তে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) খোরশেদ আলমসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় জানা যায়, জীবন শেরপুর শহরের মধ্য নওহাটা এলাকার সাইদুর রহমান সুরুজ মাস্টারের ছেলে। আব্দুল হালিম জীবন ১৫-১৬ বছর আগে ডিভি লটারিতে নাগরিকত্ব পেয়ে আমেরিকায় চলে যান। পরে বিয়ে করে স্ত্রীকেও আমেরিকা নিয়ে যান। কিন্তু তাদের বৈবাহিক জীবনে কোনো সন্তান না হওয়ায় তাদের পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হয়। এ জন্য গত বছর দুয়েক আগে প্রথম স্ত্রীকে আমেরিকায় রেখে শেরপুরে এসে আর আমেরিকা ফেরত যাননি জীবন।

দেশে এসে সন্তানের আশায় তিনি আতিয়া আক্তারকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এর পর থেকেই তাদের পারিবারিক কলহ আরও বেড়ে যায়। এতে বিষয়টি মামলা-মোকদ্দমায় পৌঁছায়। জীবনের বাবা সাইদুর রহমান সুরুজ মাস্টার চারটি মামলা করেন জীবন ও তার দ্বিতীয় স্ত্রীর বিরুদ্ধে। দ্বিতীয় স্ত্রী আতিয়া আক্তার শ্বশুর সুরুজ মাস্টারের বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ দুটি মামলা করেন। এ মামলায় দীর্ঘদিন জেল খেটে এক সপ্তাহ আগে জেল থেকে বেরিয়ে আসেন সুরুজ মাস্টার। এতে জীবন ও তার দ্বিতীয় স্ত্রীর বিরুদ্ধে পরিবারের লোকজন ও তার প্রথম স্ত্রী আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তাই জীবনকে হত্যার ষড়যন্ত্র শুরু হয়।

জীবনের আরেক প্রবাসী ভাই তার বন্ধু শাহিনকে দায়িত্ব দেন জীবনকে ঠিক করতে। শাহিন তার ব্যবসায়িক পার্টনার চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রউফকে দায়িত্ব দেন। আব্দুর রউফ তার সহযোগী কালো, মোবারক, রাকিব, রুপা ও মনোয়ারাকে দায়িত্ব দেন জীবনকে হত্যা করার। এই টার্গেটে প্রথমে রুপা জীবনের সঙ্গে প্রেমের অভিনয় করেন। গত ৩০ মার্চ তাকে রুপার ভাড়া বাসা শেরপুর শহরের পূর্বশরীতে নিয়ে যান। পরে সেখানেই উল্লিখিত ব্যক্তিরা জীবনকে খুন করে শেরপুর সদরের চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের চুনিয়ারচর ব্রহ্মপুত্র নদীর পাড়ে ফেলে রাখে।

জীবনকে হত্যার সময় ধস্তাধস্তিতে দুই খুনি কালো ও রাকিব হোসেন জিহাদ আহত হলে তাদেরকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকেই পুলিশ তাদেরকে গ্রেপ্তার করে। শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আব্দুর রউফ চেয়ারম্যান, মোবারক, রুপা ও মনোয়ারাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ ব্যাপারে শেরপুর সদর থানায় ছয়জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন দ্বিতীয় স্ত্রী আতিয়া আক্তার। ঘটনার বিষয়ে আরও বিস্তর তদন্ত চলছে বলে জানান পুলিশ সুপার মোনালিশা বেগম। তিনি বলেন, এ ঘটনায় যে বা যারাই জড়িত থাকুক না কেন, কেউ রেহাই পাবে না।

প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে।