
“কানাডায় আশ্রয়প্রার্থী বাংলাদেশি নাগরিক মাহিন শাহরিয়ার যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) কর্তৃপক্ষের হেফাজতে রয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, ভুলবশত কানাডা সীমান্ত অতিক্রম করার পর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন। এরপর সেখানে আটক হন। কিন্তু এখন কানাডা তাকে ফিরিয়ে নিতে অস্বীকার করছে।
সম্প্রতি টেলিফোনে কানাডীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাহিন দাবি করেন, এক বন্ধুর পাল্লায় পড়ে আজ তার এই অবস্থা। মাহিন বলেন, তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন, আর একজন বন্ধু তাকে মন্ট্রিয়লের কাছাকাছি কয়েকদিন থাকার প্রস্তাব দেন।
মাহিনের দাবি আমি কিছুদিন নিজের বাড়ির বাইরে থাকতে চেয়েছিলাম। সে (কথিত বন্ধু) বললো, তার কাছে থাকার জায়গা আছে। কিন্তু যে ঠিকানা তিনি পান, তা কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তের খুব কাছেই ছিল।
মাহিন শাহরিয়ার জানান, ওই বন্ধু ফোনে আমাকে দিকনির্দেশনা দিচ্ছিল। জিপিএস দেখে সে বলছিল কোথায় যেতে হবে। তারপর দেখি আমি যুক্তরাষ্ট্রে চলে এসেছি। এটা একদমই আমার উদ্দেশ্য ছিল না।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের পর শাহরিয়ার সীমান্তরক্ষীদের কাছে সাহায্য চাইলে তাকে আটক করা হয়। মাহিনের পক্ষে তাকে কানাডায় ফিরিয়ে আনার জন্য তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন তার আইনজীবী ওয়াসিম আহমেদ। ওয়াসিম প্রথমে মাহিনকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য কানাডার কর্তৃপক্ষকে চাপ দিতে আইসিই পুলিশকে অনুরোধ করেছিলেন। সেই অনুরোধের জবাবে গত ১ আগস্ট ওয়াসিমকে পাঠানো এক ইমেইলে আইসিই-র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র মাহিনকে গ্রহণ করার জন্য কানাডীয় কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করবে না।
এরপর কানাডার অভিবাসন কর্তৃপক্ষ কানাডা বোর্ডার সার্ভিস এজেন্সি (সিবিএসএ)-এর কাছে মাহিনকে ফিরিয়ে আনতে অনুরোধ করেন তিনি। সেই আবেদনের জবাবে সিবিএসএ-এর কর্মকর্তারা বলেন, কানাডায় বসবাসরত কোনো বিদেশি নাগরিক যদি অন্য কোনো দেশে গিয়ে অভিবাসন কর্তৃপক্ষের হাতে ধরা পড়ে, সেক্ষেত্রে সিবিএসএ-এর কিছু করার নেই।
তবে কানাডা যদি একেবারেই ফেরত না নেয়, তাহলে হয়তো ভবিষ্যতে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে।
মাহিন শাহরিয়ারের বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর ২০১৯ সালে কানাডায় আসে মাহিন, তার মা এবং বোন। কানাডায় আসার পর তারা তিন জনই শরণার্থী হিসেবে বসবাসের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন। মা এবং বোনের আবেদন গৃহীত হলেও মাহিনের আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। ওয়াসিম জানিয়েছেন, এক প্রতারক পরামর্শকের মাধ্যমে আবেদন করেছিলেন মাহিন। আবেদনপত্রে তথ্যের কারচুপি থাকায় তার প্রাথমিক আবেদন বাতিল হয়। এ ব্যাপারটি নিয়েই তিনি অবসাদের ছিলেন।
কানাডায় পরিবারের খরচ মেটানোর জন্য উবার ট্যাক্সি চালাত মাহিন। তার বোন কানাডার একটি স্কুলে পড়াশোনা করে। তবে মাহিন আটকের পর থেকে তাদের পুরো পরিবার এলোমেলো হয়ে পড়েছে।” জাগো নিউজ 24 এর পোস্ট
সূত্র: দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইল









































