
আগামী ১৩ নভেম্বরের আওয়ামী লীগের ডাকা ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি সফল করার উদ্দেশ্যে নাশকতার জন্য অর্থ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে। ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. ফারুক হোসেন ওরফে ‘বোম ফারুক’কে জিজ্ঞাসাবাদের পর জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আব্দুল জলিল মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেন।
পুলিশ সুপার জানান, নিক্সন চৌধুরী তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ফারুক হোসেনকে ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি সফল করার জন্য ৫ লাখ টাকা দিয়েছেন। ফারুক হোসেন জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন যে সেই টাকার মধ্যে ৪ লাখ টাকা তিনি একজনকে দিয়েছেন। সেই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে তার নাম প্রকাশ করা হয়নি। এছাড়াও, ফারুক হোসেন বিভিন্ন সময়ে প্রোগ্রামের জন্য বিকাশের মাধ্যমে তার দলীয় লোকজনকে অর্থ প্রেরণ করেন বলে জানান এসপি।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলি এলাকার নুরজাহান টাওয়ারের একটি ফ্ল্যাট বাসা থেকে ফারুক হোসেনকে গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় চারটি এবং রাজধানীর সূত্রাপুর থানায় দুটিসহ মোট ছয়টি মামলা রয়েছে।
পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল জানান, গত ৯ নভেম্বর সারা বাংলাদেশকে অচল করার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ ও মহিলা যুবলীগের কর্মীরা ফারুক হোসেনের মদদে ফরিদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি মিছিল বের করে। সেই মিছিল থেকে বর্তমান সরকারকে উৎখাত, রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুরসহ সরকারের বিপক্ষে নানা ধরনের উসকানিমূলক স্লোগান দেওয়া হয়। এরপরই পুলিশ তদন্ত শুরু করে।
গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় সোমবার ঝিলটুলী এলাকার নুরজাহান টাওয়ারের ১০ তলার এক ফ্ল্যাট থেকে ফারুক হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় যুব মহিলা লীগের এক নেত্রী নাসরিন আক্তারকেও গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ সুপার নিশ্চিত করেন, আটক হওয়া নারী মহিলা যুবলীগের সদস্য হলেও ‘আপত্তিকর অবস্থায় পাওয়ার রটনা সত্য নয়’।
ফারুক হোসেনের মোবাইল ফোন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ‘ঢাকা লকডাউন’ সফল করার লক্ষ্যে তিনি বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করেছেন। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হবে বলে জানান পুলিশ সুপার।
এসপি আব্দুল জলিল জানান, ১৯৮১ সালে ফারুক হোসেন শহরের টেপাখোলা এলাকার ইয়াসিন কলেজের ভিপি ছিলেন। সেই সময় ছাত্রদলের ওপর হাতবোমা নিক্ষেপের সময় বোমাটি তার হাতে বিস্ফোরিত হয় এবং বাম হাতের একটি আঙুল উড়ে যায়। সেই সময় থেকেই তিনি ফরিদপুরে ‘বোম ফারুক’ নামে বেশি পরিচিত।
পুলিশ সুপার আরও জানান, ১৩ তারিখের ‘ঢাকার লকডাউন’-এ নাশকতা রোধে ফরিদপুর জেলাসহ বিভিন্ন থানা এলাকা হতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৯ জনকে আটক করা হয়েছে। গত তিন দিনে মোট ৬০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকে আওয়ামী যুবলীগ নেতা রয়েছেন। তিনি বলেন, গ্রেপ্তারের এই অভিযান চলমান রয়েছে।
সূত্র : জনকণ্ঠ













































