
টগবগে যুবক সাজ্জাদ হোসেন। রেন্ট এ বাইকে চাকরি করা সাজ্জাদের নিথর দেহ এখন পড়ে আছে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে। স্বজনদের অভিযোগ, গরু চুরির অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে তাকে। শুক্রবার (১৬ আগস্ট) দিবাগত মধ্যরাতে তাকে হাসপাতালে ফেলে যায় হত্যাকারীরা। তার সঙ্গে আরও চারজনকে পেটানো হয়। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
হাসপাতালে আহতদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গরু চুরির সঙ্গে জড়িত নয় দাবি করে তারা জানান, শুক্রবার দুপুরে চুরির অপবাদ দিয়ে তাদেরকে কয়েক দফায় পেটানো হয়। এক পর্যায়ে জোর করে টাকাও আদায় করে। তাদেরকে জিম্মি করে টাকা আদায়ের ভিডিওচিত্রও দেখান সাংবাদিকদের।
এদিকে শনিবার ভোরে সাজ্জাদের পরিবারের কাছে খবর যায়, সাজ্জাদের মরদেহ হাসপাতালে পড়ে রয়েছে। সাজ্জাদের বাড়ি কলাতলীর মেম্বারঘাটা এলাকায়। হাসপাতালের মর্গের সামনে কথা হয় তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। তারা জানান, সাজ্জাদ চুরি বা অন্যকোন অপরাধের সঙ্গে জড়িত নয়। মূলত অপহরণ করে মুক্তিপণের জন্য গরু চুরির নাটক সাজিয়েছিল। তাদের মারধরে সাজ্জাদের মৃত্যু হয়েছে।
সাজ্জাদের স্বজন ও এলাকাবাসীর দেয়া তথ্যমতে, সাজ্জাদসহ ৫ জনকে গরু চুরির অপবাদে আটক করে কলাতলীর সৈকতপাড়া এলাকার নুর মোহাম্মদের পরিবার ও তার আত্মীয় স্বজনেরা। বিভিন্ন স্থানে কয়েক দফা পেটানোর পর তাদেরকে নুর মোহাম্মদের বাড়িতে আটকে রেখে পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়। তাদেরকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে গরুর মালিক দাবিদার নুর মোহাম্মদ, তার ছেলে রাসেল ও সোহেল, ভাতিজা আকাশ ও আরিফ, স্থানীয় মনজুর, মনিরসহ অনেকের বিরুদ্ধে।
সাজ্জাদের মৃত্যুর পর নুর মোহাম্মদের ছেলে মোহাম্মদ রাসেল ছাড়া বাকিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন মোহাম্মদ রাসেল। শনিবার দুপুরে সৈকতপাড়ায় গিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। চুরি করলে মারবে এটাই স্বাভাবিক উল্লেখ করে তাদের মারধরে মৃত্যু হয়নি দাবি করে তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীর উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করেন। চুরির অপবাদ দিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি পরিবারের।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রকিবুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, হত্যার বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।