
ফেসবুকে বিকৃত ছবি পোস্ট করাকে কেন্দ্র করে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের পালিশারা গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
উপজেলা যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব কাজী জসিম জানান, গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাওলানা ইলিয়াস হোসেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানাকে নিয়ে বিকৃতকর একটি ছবি শেয়ার করেন। যার ফলে গতকাল বিকেল থেকে এ নিয়ে উত্তেজনা চলছে। আজ সকালে বিএনপির নেতাকর্মীরা মাওলানা ইলিয়াসকে বিষয়টি জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে জামায়াতের নেতাকর্মীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল মিজী, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নেছার আহম্মেদ চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবদুল কুদ্দুস, ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সভাপতি কামালসহ প্রায় ১০জন গুরুতর আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৫ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। বাকি ৫ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
ইউনিয়ন জামায়াতের আমির ও পালিশারা শাহমিরান মিরা বাড়ী জামে মসজিদের খতিব মাওলানা ইলিয়াস হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত ফেসবুক থেকে একটি ছবি আমার অসাবধানবশত শেয়ার হয়েছে। বিষয়টি আমাকে কয়েকজন জানানোর পর আমি ডিলেট করে দিই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার মোবাইলটি ঘরে থাকে, অনেক সময় বাচ্চারা ব্যবহার করে, এতে বাচ্চারাও শেয়ার করতে পারে। ঘটনা যা হয়েছে, আমি ফেসবুকে পোস্ট করে দুঃখ প্রকাশ করেছি। তার পরেও আজ সকালে বসার কথা ছিল। আমার উদ্দেশ্য ছিল, আমি ক্ষমা চাইব। কিন্তু তারা বসার আগেই আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে। এতে বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়।’
গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়ন জামায়াতের সাবেক আমির হাফেজ আবদুল মোতালেব জানান, জামায়াত নেতাকর্মীদের মধ্যে আহতরা হলেন ৪ নম্বর ওয়ার্ড পালিশারা গ্রামের জামায়াতের আমির হাফেজ আহমেদ, সেক্রেটারি ফয়সাল, মোহাম্মদুপর ১ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের আমির আনোয়ার হোসেন, ইউনিয়ন জামায়াতের সাবেক আমির হাফেজ আবদুল মোতালেব, জামায়াতের কর্মী শরীফ, সাদ্দাম, মনু, রাশেদ, রাজু। তারা চাঁদপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অন্যরা স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।
ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস মাস্টার ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মীদের হামলা ও মারধরের বিষয়টি উপজেলা বিএনপির নেতাদের জানানো হয়েছে। এখন দলীয় যে নির্দেশনা আসবে, আমরা ওই নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করব।’
উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা মোজাম্মেল হোসেন পরান বলেন, `আমি বিষয়টি নিজে দেখছি। যা হয়েছে, এ জন্য ক্ষমা চাওয়া হয়েছে। তারপরেও হামলা করাটা দুঃখজনক।’
উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ রহিম পাটওয়ারী বলেন, `আমাদের নেতা তারেক রহমান ও বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানার ছবিকে মূর্তি নিয়ে মাওলানা ইলিয়াস ফেসবুকে পোস্ট করে। বিষয়টি আমাদের নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ জানালে জাময়াতের নেতাকর্মীরা আমাদের নেতাকর্মীদের উপর হামলা করে। এ ঘটনায় প্রায় ১৫ জন আহত হয়েছে।’
হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, `দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে। পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগে পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’