“রাষ্ট্রদ্রোহের মতো ঘটনায় যুক্ত থাকলে কোনোপ্রকার ছাড় দেওয়া হবে না” বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
আজ মঙ্গলবার রংপুরে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, “বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার ওপর যদি কোনোপ্রকার হস্তক্ষেপ ও আঘাত আসে, এবং রাষ্ট্রের প্রতি অবমাননা হয়, রাষ্ট্রদ্রোহের মতো ঘটনা ঘটে, সেক্ষেত্রে সরকার অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নিবে।”
এরপর তিনি বলেন যে “একটি গ্রেফতারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে”। তবে “আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, কেউ যদি রাষ্ট্রদ্রোহের মতো ঘটনায় যুক্ত থাকে, সে যে-ই হোক, যত বড় নেতাই হোক, তাকে কোনোপ্রকার ছাড় দেওয়া হবে না।”
এক্ষেত্রে, “সম্প্রদায় বিবেচনায় নয়, রাষ্ট্রের বিবেচনায় আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে” বলেও তিনি জানান।
কার গ্রেফতারের ঘটনায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা চলছে, সেটি সরাসরি বলেনি ক্রীড়া উপদেষ্টা। তবে সম্প্রতি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি হলেন সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস। তাকে গতকাল সোমবার ঢাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার তাকে চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হলে শুনানি শেষে বিচারক কাজী শরীফুল ইসলাম তার জামিন নাকচ করার আদেশ দেন।
এই ঘটনাকে ঘিরে গতকাল তো দেশজুড়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অনেকে বিক্ষোভ করেছেনই। আজও তার অনুসারীরা আদালত চত্বরেইপ্রাঙ্গনে বিক্ষোভ করেছেন।
এদিকে জামিন নামঞ্জুরের আদেশের পর প্রিজন ভ্যান থেকেই মি. দাস হ্যান্ডমাইকে তার অনুসারীদের শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করার আহ্বান জানান।
এক ভিডিওতে মি. দাসকে বলতে দেখা যায়, “রাষ্ট্র অস্থিতিশীল হয় এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নষ্ট হয় আমরা এইরকম কিছু করবো না। আবেগকে সংযত করে, আবেগকে শক্তিতে পরিণত করে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করবেন।”
সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে আদালত।
আজ মঙ্গলবার তাকে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় করা একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হলে শুনানি শেষে বিচারক কাজী শরীফুল ইসলাম এ আদেশ দেয়।
তবে জামিন নাকচ করলেও মি. দাসের কারাগারে ডিভিশন এবং ধর্মীয় রীতি-নীতি পালনের অনুমতি চেয়ে করা দুইটি আবেদন মঞ্জুর করেছে আদালত।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবীরা গণমাধ্যমে দাবি করেছেন, ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
জামিন আবেদন নামঞ্জুর হওয়ায় চিন্ময় দাসের অনুসারীরা সকাল থেকেই আদালত প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ করছেন এবং কারাগারে পাঠানোর আদেশের পর আদালত চত্বরেই মি. দাসকে বহনকারী প্রিজন ভ্যানটি ঘিরে ধরেন বিক্ষোভরতরা।
এক ঘন্টা আগেচিন্ময় দাসের মুক্তি নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সাথে আলোচনা করতে ভারতের প্রতি অনুরোধ ইসকনের
সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে আটকের বিষয়ে ভারতের হস্তক্ষেপ চেয়ে এবার বিবৃতি দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস (ইসকন)।
গতকাল তাদের অফিশিয়াল এক্স (পূর্বের টুইটার) হ্যান্ডেলে টুইট করে জানিয়েছে, সন্ত্রাসবাদের সাথে ইসকনের যুক্ত থাকার অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং অত্যন্ত আপত্তিজনক।
টুইটে বলা হয়, “ইসকন ভারত সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছে যেন তারা অবিলম্বে বাংলাদেশ সরকারের সাথে আলোচনা করে এই বিষয়টি স্পষ্ট করে যে আমরা একটি শান্তিপ্রিয় ভক্তি আন্দোলন।”
তারা ইসকন নেতা চৈতন্য কৃষ্ণ দাসকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার অনুরোধও জানায়।
গতকাল সোমবার বিকালে ঢাকা থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে আটক করা হয়েছিলো। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন, “সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে উনাকে আটক করা হয়েছে। উনার নামে যে মামলা রয়েছে, সেই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে।”
উল্লেখ্য যে, গত পাঁচই অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশব্যাপী সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে আট দফা দাবিতে বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ সমাবেশসহ নানান কর্মসূচি পালন করে আসছে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |