প্রচ্ছদ জাতীয় গর্ত থেকে হুক্কা হুয়া ফ্যাসিস্ট কাদেরের! উদ্দেশ্য কী?

গর্ত থেকে হুক্কা হুয়া ফ্যাসিস্ট কাদেরের! উদ্দেশ্য কী?

২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে ইতিহাসের নারকীয় এক হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে চোরের মত লেজ গুটিয়ে ভারতে পালিয়েছে ফ্যাসিস্ট হাসিনা। এই স্বৈরাচার পালালেও দীর্ঘ তিন মাস নাকি দেশেই ছিলেন জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র জনতার ওপর সরাসরি গুলি চালানোর নির্দেশদাতা ওবায়দুল কাদের। এরপর ভারতে পালিয়ে গেলেও কখনো প্রাকাশ্যে আসেননি তিনি। দীর্ঘ নয় মাস পর অবশেষে ভারতীয় একটি গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন কাদের। শিয়ালের মত গর্ত থেকে উঠে রীতিমতো হুক্কা হুয়া ডাকে অতিষ্ঠ করে তোলেন চারিদিকের পরিবেশ। একের পর এক মিথ্যা আর বানোয়াট রূপকথার গল্প শোনান সেই সাক্ষাৎকারে। জনমনে এখন প্রশ্ন এতদিন নিশ্চুপ থাকা কাউয়া কাদের হঠাৎ করে কেন প্রকাশ্যে এসেছেন? কী তার উদ্দেশ্য?

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ওয়ালের এক্সিকিউটিভ এডিটর অমল সরকারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওবায়দুল কাদের তুলে ধরেছেন ২৪ এর ৫ আগষ্টের কিছু ঘটনা। শুধু তাই নয় এই সাক্ষাৎকারে ফ্যাসিস্ট কাদের একবারের জন্যও জুলাই অভ্যুত্থানে ঘটানো হত্যাকাণ্ডের জন্য ক্ষমা চাননি। উল্টো নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নেত্রী হাসিনার পদাঙ্কু অনুসরণ করে বারবার হুংকার দিয়েছেন ফিরে আসার।

ভারতীয় গণমাধ্যমটিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কাউয়া কাদের তুলে ধরেন, ৫ আগষ্ট হাসিনা পালানোর পর তার সংসদ ভবনের বাসা ছেড়ে পাশের বাসায় আশ্রয় নেওয়ার কথা। এমনকি তিনি এটিও বলেছেন সেই বাসাতেও নাকি তার ওপর আক্রমণ করেছিলো গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতা। এক পর্যায়ে ভয়ে স্ত্রীসহ ৫ ঘন্টা বাথরুমেই লুকিয়ে ছিলেন তিনি। এরপর নাকি কাউয়া কাদেরের সাথে তারা আক্রমণাত্বক ভঙ্গি থেকে শান্ত হয়ে সেল্ফি তোলেন এবং নিজেদের শার্ট পড়িয়ে কাদেরকে কোথাও একটা নিয়ে যান। তার এমন উদ্ভট কথাবার্তা ইতিমধ্যে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে বেশ হাস্যরসের জন্ম দিয়েছে, হচ্ছে একের পর এক ট্রল।

এই সাক্ষাৎকারটির এক পর্যায়ে কাদেরকে বলতে শোনা যায়, ২৪ এ তিনি যা করেছেন তার সব নেত্রী হাসিনার নির্দেশেই করেছেন। এখানে তিনি তার কৃতকর্মের জন্য নিজেকে দায়ী না করে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে দায়ী করছেন। এ যেনো ঠিক ছোট বাচ্চাদের আচরণ। তবে হঠাৎ দীর্ঘ নয় মাস পর ওবায়দুল কাদেরের এভাবে উদয় ঘটায় বিশেষজ্ঞরা এখানে নতুন ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন। তাদের মতে, কাদের এই নয় মাসে বারবার চেষ্টা করেছেন তাকে মৃত প্রমাণের। একের পর এক প্রোপাগান্ডা ছড়িয়েছেন নিজেকে নিয়ে। ভারতে বসে ফ্যাসিস্ট হাসিনার সাথে মিলে দেশকে অস্থিতিশীল করার নানা ষড়যন্ত্র করে সেই সবে ব্যর্থ হয়ে এবার এঁকেছেন নয়া ষড়যন্ত্রের কৌশল। আর এভাবে মিডিয়ার সামনে এসে উদ্ভট মন্তব্য করাটা সেটারই বহিঃপ্রকাশ।

বিশেষজ্ঞরা আরও মনে করছেন সম্প্রতি নিষিদ্ধ হয়েছে আওয়ামী লীগ আর ঝিমিয়ে পড়েছেন দলটির নেতাকর্মীরা। একে একে দলবেধে আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগের মিশনে নেমেছেন মফস্বলের অনেক নেতারা। ঠিক তখনই কাদেরের আগমন ঘটলো দলকে উজ্জীবিত করার জন্য। এর পাশাপাশি নির্বাচনের সময়সীমা অন্তর্বর্তী সরকার ইতিমধ্যে বলে দিয়েছে। আসন্ন নির্বাচনকে বানচালের উদ্দেশ্যে কাদের জানান দিলেন আমি এখনো মরিনি আমি বেঁচে আছি তোমরা মাঠে নামো। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন বিষয়টি নিয়ে জনসাধারণকে সতর্ক থাকতে হবে।

আওয়ামী লীগ বিগত ১৬ বছর যে স্বৈরাচারিতা দেখিয়েছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা আর কাদেরের নেতৃত্বে যেভাবে সাধারণ মানুষের বাকস্বাধীনতা ভোটের অধিকার কেঁড়ে নিয়েছিলো আর কায়েম করেছিলো হত্যা-গুমের রাজনীতি তাতে বাংলার আমজনতা তাদের আর দেখতে চায় না। ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে বেলা ফুরাবার সময়ও প্রায় দেড় হাজার ছাত্র-জনতা হত্যা করে এখন ভিনদেশে বসেই সেদেশের মিডিয়ার সামনেই শিয়ালের মত হুক্কা হুয়া করছে কাউয়া কাদের। এ যেনো চরম নির্লজ্জতা আর বেহায়াপনারই বহিঃপ্রকাশ।
সূত্র: ইনকিলাব