
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে তৌহিদী জনতা ও নুরাল পাগলার ভক্তদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যখন তৌহিদী জনতার হামলায় নুরাল পাগলার দরবার শরীফে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে তার মরদেহ কবর থেকে তুলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে পুড়িয়ে ফেলা হয়।
নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলা ১৯৮০–এর দশকের শেষের দিকে নিজেকে ইমাম মাহাদী দাবি করে আলোচনায় আসেন। ১৯৯৩ সালে জনরোষ এড়াতে এলাকা ত্যাগ করলেও পরে ফের নিজ গ্রামে ফিরে দরবার শরীফ প্রতিষ্ঠা করেন। চলতি বছরের ২৩ আগস্ট তিনি রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। পরদিন এলাকাবাসীর অংশগ্রহণে প্রথম জানাজা শেষে দরবার শরীফ প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় জানাজা হয় এবং তাকে মাটি থেকে প্রায় ১২ ফুট উঁচু স্থানে দাফন করা হয়।
দাফনের পর কবর পবিত্র কাবা শরীফের আদলে রঙ করা হলে তৌহিদী জনতার মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। আন্দোলনের মুখে পরে কবরের রঙ পরিবর্তন করা হলেও মরদেহ নিচে নামাতে অনীহা দেখায় নুরাল পাগলার পরিবার। বিষয়টি নিয়ে একাধিক বৈঠক হলেও সমাধান না আসায় উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর গোয়ালন্দ আনসার ক্লাব মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশ করে তৌহিদী জনতা। সেখান থেকে দরবার শরীফে হামলা হলে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে দরবারে অগ্নিসংযোগের পর মরদেহ কবর থেকে তুলে মহাসড়কে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ ঘটনাকে “অমানবিক ও জঘন্যতম অপরাধ” আখ্যা দিয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগের মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনা হবে।