প্রচ্ছদ জাতীয় ইতিহাসের ব্যয়বহুল ও সুশৃঙ্খল সমাবেশ এর আগে দেখা হয়নি

ইতিহাসের ব্যয়বহুল ও সুশৃঙ্খল সমাবেশ এর আগে দেখা হয়নি

এক মাসেরও বেশি সময়ের প্রস্তুতি। অনলাইন-অফলাইনে বিরামহীন প্রচারণা। নেতাকর্মীরা দাওয়াতপত্র নিয়ে গেছেন ঘরে ঘরে। লিফলেট বিতরণ হয়েছে শহর থেকে গ্রামে। ব্যানার-ফেস্টুন বিলবোর্ডে সয়লাব অলিগলি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বর্ণাঢ্য আয়োজন। সবমিলিয়ে শতকোটি টাকা ব্যয়ের এক মহাসমাবেশ করলো বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এটিই হচ্ছে জামায়াতের প্রথম কোনো সমাবেশ।

মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ব্যাপক প্রচারণা চালায় দলটি। ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ডের পাশাপাশি অনলাইনেও প্রচারণা চালানো হয়। যার পেছনে খরচ করা হয় কাড়িকাড়ি অর্থ। গতকালের সমাবেশেও নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছিল বর্ণিল। জাতীয় পতাকা, দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা, দলীয় পতাকা হাতে গায়ে নানা রঙের টি-শার্ট পরে নেতাকর্মীরা অংশ নেন সমাবেশে। জাতীয় পতাকার লাল-সবুজের রঙে সাজানো হয় সভা মঞ্চ। যে মঞ্চে অতিথিদের জন্যই রাখা হয়েছিল তিন শতাধিক চেয়ার।

বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে সমাবেশের উপযোগী করে তৈরি করা হয়। উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে সমাবেশ সম্প্রচার করা হয় নিজস্ব ফেসবুক পেইজে। উপর থেকে ড্রোনের মাধ্যমে নেয়া হয় ফুটেজ। শাহবাগসহ আশপাশের এলাকায় বসানো হয় জায়ান্ট স্ক্রিন। সব মিলিয়ে সম্প্রচারেও ব্যয় হয়েছে বিপুল অর্থ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এর আগে এই উদ্যানে আরও অনেক রাজনৈতিক সমাবেশ হয়েছে। এসব সমাবেশের চেয়ে এবারের জামায়াতের সমাবেশের আয়োজন হয়েছে বেশি সময় ব্যাপী প্রস্তুতি নিয়ে। সমাবেশ সফল করতে দলটির পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টাও করা হয়েছে।

জামায়াত জানিয়েছে, ১০ লাখ লোকের জনসমাগম ঘটাতে নেতাকর্মীদের জন্য সারা দেশ থেকে ১০ হাজারের বেশি বাস, বেশকিছু লঞ্চ এবং কয়েক জোড়া রিজার্ভ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়। জামায়াত কর্মী-সমর্থকরা নিজেদের খরচে আসছেন বললেও প্রত্যেকের পেছনে কমপক্ষে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা ব্যয় করেছে দলটি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও তার আশপাশের এলাকা মিলে দলটির প্রায় ৪ থেকে ৫ লাখ কর্মী-সমর্থক সমাবেশে যোগ দিয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্রের দাবি।

জামায়াতের সমাবেশের ব্যয়ের বিষয়ে দলীয়ভাবে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তবে দলের সেক্রেটারি জেনারেল এক সংবাদ সম্মেলনে সমাবেশকে একটি ব্যয়বহুল কর্মসূচি বলে উল্লেখ করেছিলেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সমাবেশের সার্বিক কার্যক্রমে দলীয় নেতাকর্মী, সুধী, শুভাকাঙ্ক্ষীরা স্বেচ্ছায় সহযোগিতা করেছেন। তাদের দেয়া অর্থে সমাবেশ সফল হয়েছে। সমাবেশে যারা এসেছেন তারাও নিজের অর্থ খরচ করে এসেছেন। তাই সমাবেশের পুরো ব্যয়ের তথ্য দলীয়ভাবে পাওয়া যাবে না। তবে সমাবেশ স্থলের আয়োজন ও দলীয় ব্যানার পোস্টার এবং প্রচারণার ব্যয়ের তথ্য দলীয়ভাবে সংরক্ষণ করা হবে।