
সারাদেশ: পাবনার বেড়া উপজেলার সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম শফিক’কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত শফিক চাকলা আশ্রয়ণ প্রকল্পের মুকা খাঁর ছেলে। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার চাকলা আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকার বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম শফিক প্রকল্পের আরেক বাসিন্দা এক গৃহবধূর (৩০) ঘরে প্রবেশ করে তাকে ধর্ষণ করেন। এ সময় তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হলে তিনি পালিয়ে যান।
এ ঘটনার পরদিন বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) চাকলা ইউনিয়ন পরিষদে সালিশী বৈঠক হয়। সেখানে চাকলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী সরদারের নির্দেশে অভিযুক্তকে নাকে খত, জুতাপেটার পাশাপাশি এক হাজার টাকা জরিমানা করে মীমাংসা করা হয়। এ সময় ভুক্তভোগীদের পরবর্তীতে কোনো মামলা বা ঝামেলা না করতেও হুমকি দেন চেয়ারম্যান। ভুক্তভোগীর স্বামী আবদুল রাজ্জাক বলেন, ‘মাত্র এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আমার স্ত্রীর ইজ্জতের মূল্য কি এক হাজার টাকা? সেখানে আমাকে অনেক ভয় দেখানো হয়েছে। চেয়ারম্যান বলেছে তু্ই যদি মামলা করিস তাহলে আমি বলে দেব তুই তোর স্ত্রীকে দিয়ে দেহ ব্যবসা করাস। এজন্য আমি প্রথমে পুলিশের কাছে যায়নি। আমি আমার স্ত্রীকে ধর্ষণ ও তামাসার ঘটনায় বিচার চাই।’
অভিযোগ অস্বীকার করে চাকলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী সরদার বলেন, আমার কাছে উভয় পক্ষ আসলে আমি স্থানীয় মেম্বারদের সহযোগিতায় একটি সালিশী বৈঠক করেছি। সেখানে ধর্ষণের কোনো অভিযোগ ছিল না। তারপরও যেহেতু একজন নারীর ঘরে বিনা অনুমতিতে ঢুকেছিল সেজন্য আমরা তাকে (অভিযুক্ত) কান ধরে উঠবস করিয়েছি। কিন্তু কোনো জরিমানা করা হয়নি। যে ১ হাজার টাকা নেয়া হয়েছে সেটা জরিমানা নয়, ওটা গ্রাম্যপুলিশদের খরচ হিসেবে দেয়া হয়েছে। তখন উভয় পক্ষ আমাদের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছিল। এখন তারা মানছে না।
মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশিদুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগী গৃহবধূ বাদী হয়ে ৩ ফেব্রুয়ারি থানায় অভিযোগ করেন। অভিযোগ পাওয়ার পর অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম শফিককে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু আমরা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।