আবেগঘন মুহূর্তের সাক্ষী হলো জনতা ব্যাংক দাউদকান্দি শাখা। ছেলের পাঠানো ১০ লাখ টাকা একসঙ্গে ছুঁয়ে দেখলেন বাবা-মা। ঠিক সে সময় তৈরি হয় এক আবেগঘন মুহূর্ত।
আর এমন মুহূর্তের কথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন জনতা ব্যাংক দাউদকান্দি শাখার ম্যানেজার মোহাম্মদ জসীম উদ্দীন। এরপর থেকেই পোস্টটি বিভিন্ন গ্রুপে শেয়ার হয়। রাতারাতি ভাইরাল হয় পোস্টটি।
‘বীরপুরুষ’ ক্যাপশন দিয়ে পোস্টটিতে জসীম উদ্দীন লেখেন, বীরপুরুষ। ছেলে অস্ট্রেলিয়া থাকে। প্রতিমাসে বাবার একাউন্টে টাকা পাঠায়। বাবা সেখান থেকে কিছু টাকা তুলে সংসার চালায়। বাকী টাকা জমা থাকে একাউন্টে। গত দুই বছর এভাবেই চলেছে তাদের সংসার। এর মধ্যে ছেলের পাঠানো টাকা জমা হতে হতে দশ লাখে পরিণত হয়েছে। এবার ছেলে সে টাকা, তার মায়ের নামে ফিক্সড ডিপোজিট করে রাখতে চায়। বাবাও তাতে খুশি। আজ বাবা-মা জনতা ব্যাংকের দাউদকান্দি শাখায় আসেন। তারা যখন আমার সামনে বসা, এ সময় ছেলে আমাকে ফোন দিয়ে অনুরোধ করে-আমি জেনো পুরো দশ লাখ টাকা তার মায়ের হাতে কিছুক্ষণের জন্য তুলে দেই। সে ছেলের ইনকামের টাকা নিজ হাতে ছুঁয়ে দেখবে। তার কথা শুনে আমি কিছুক্ষণ চুপ হয়ে গেলাম! মায়ের সেই ছোট্ট খোকাটি আজ অনেক বড় হয়েছে। সে কেবল তার কামাইয়ের টাকা পরিমাণ বা সংখ্যা দিয়ে মাকে বুঝাতে চায় না। মায়ের সামনে দৃশ্যমান করতে চায়। দেখো মা-এই টাকা তোমার খোকা তোমার জন্য যোগার করেছে! ছেলের কথাগুলো শুনছিলাম, আর মনে মনে ভাবছিলাম ছোট্ট বেলার “বীরপুরুষ” কবিতাটির কথা-
মনে করো, যেন বিদেশ ঘুরে
মাকে নিয়ে যাচ্ছি অনেক দূরে।
তুমি যাচ্ছ পালকিতে, মা, চড়ে
দরজা দুটো একটুকু ফাঁক করে,
আমি যাচ্ছি রাঙ্গা ঘোড়ার ‘পরে
টগবগিয়ে তোমার পাশে পাশে।
আজকাল তো অনেক মায়েরা জানতেই পারে না তার ছেলের রোজগারের খবর! প্রতিটি মায়ের এমন একটি করে বীরপুরুষ থাকুক।’
ম্যানেজার মোহাম্মদ জসীম উদ্দীন ইত্তেফাক-কে বলেন, আগেকার দিনে আমাদের রোজগারের অর্থ আমরা মায়ের হাতে তুলে দিতাম। এখন আর তেমনটি দেখা যায় না। বরং অনেক মায়ের তা জানতে চাওয়াটাও দুরূহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রবাসী রিয়াজ সরকারের প্রচেষ্টাটি আমার কাছে বেশ হৃদয় স্পর্শী মনে হয়েছে। তাই, ইতিবাচক দৃষ্টিতে তা সকলের সামনে উপস্থাপন করেছি। রবিবার বেলা ১টার দিকে আমার নিজস্ব ফেসবুক আইডিতে বিষয়টি শেয়ার করি। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তা ছড়িয়ে পরে। বেশ কিছু মোটিভেশনাল পেইজও তা পোস্ট করে এবং রাতারাতি তা ছিলো ফেসবুকের টপ রিচ অবস্থানে। আমি মনে, করি এখান থেকে অনেক তরুণের জন্য অনুকরণীয় এবং শিক্ষণীয় হতে পারে। বর্তমানে রিয়াজের মতো সন্তানের বড়ই অভাব।
সুত্রঃ ইত্তেফাক
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |