শুক্রবার (৩ মে) দুপুরে বাগমারা উপজেলার গনিপুর ইউনিয়নের পোড়াকয়া গ্রামের মাঠে হঠাৎ করেই পান বরজে আগুন লেগে যায়। আগুন মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়লে অন্তত ১০০ বিঘা পানের বরজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে ৪টি ইউনিট কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
পানের বরজ পুড়ে যাওয়া চাষি আসাদুল ইসলাম বলেন, প্রথমে আগুন লাগে ইসাহাকের বরজে। এরপরে মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে একের পর এক পানের বরজে। এতে প্রায় ৮০ জন চাষির ১০০ বিঘা জমির পানের বরজ পুড়ে গেছে। এই আগুনে অনেক চাষির এক বিঘা থেকে দেড় বিঘা করে পানের বরজ পুড়ে ছায় হয়ে গেছে। কীভাবে পানের বরজে আগুন লেগেছে কেউ জানে না।
তিনি বলেন, আগুনে এমনভাবে পুড়েছে তাতে পানের বরজের কোনো কিছু অবশিষ্ট নেই। সব বরজ নতুন করে তৈরি করতে হবে। বছরের এই সময়ে পানের দাম সবচেয়ে বেশি থাকে। এখন বাজারে নতুন পান বিক্রি হচ্ছে চার হাজার টাকা পোয়া। আর পুরোনো পান বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা পোয়া দরে। এই সময় পানের বরজ পুড়ে যাওয়া মানে চোখের সামনে টাকা পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া। গ্রামবাসী যে যেভাবে পেড়েছে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু ততক্ষণে অনেক চাষির পানের বরজ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
পানচাষি রেজাউল ইসলাম বলেন, তার এক বিঘার বেশি জমির পানের বরজ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। যেভাবে পানের বরজ পুড়েছে তাতে করে আবার নতুন করে বরজ তৈরি করতে হবে। এই বরজ তৈরি করতে আবার শীত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কারণ এখন জমিতে পান বপনের সময় না। তাই এই চাষিরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলো।
এ বিষয়ে গনিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান রঞ্জু বলেন, নির্দিষ্ট করে বলতে পারবো না। তবে ৬০-৭০ বিঘার বেশি হবে। আমরা চাষিদের তালিকা করতে বলেছি। আগামীকাল শনিবার তালিকাটা হাতে পাব। এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যামে তা জেলা প্রশাসককে দেওয়া হবে। সরকারিভাবে কিছু টাকা পেলে এই চাষিদের উপকার হবে। এ ঘটনায় অনেক চাষি একবারে নিঃস্ব হয়ে গেছে। মাত্র পাঁচ থেকে সাত মিনিটের মধ্যে চাষিদের কোটি টাকার পান পুড়ে গেছে।
এ বিষয়ে বাগমারা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মেহেদী হাসান তুহিনের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।
তবে রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আক্তার হামিদ খান বলেন, রাজশাহী, বাগমারা, মোহনপুর ও আত্রাইয়ের চারটি ইউনিট ঘণ্টা খানেকের চেষ্টায় পান বরজের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে শতাধিক কৃষকের ক্ষতি হয়েছে। কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে তা জানা যায়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম বলেন, কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের নিয়ে পুড়ে যাওয়া পানের বরজ পরিদর্শন করা হয়েছে। স্থানীয়দের প্রাথমিকভাবে ধারণা- সিগারেটের আগুন থেকে এ ঘটনা ঘটতে পারে। এ ঘটনায় আনুমানিক ৯০ থেকে ১০০ বিঘা জমির পান পুড়ে গেছে।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |