প্রচ্ছদ অপরাধ ও বিচার অলঙ্কার আর ফোন কেনার জন্য চার মাসের শিশুকে বিক্রি করলেন নিষ্ঠুর মা!

অলঙ্কার আর ফোন কেনার জন্য চার মাসের শিশুকে বিক্রি করলেন নিষ্ঠুর মা!

সমাজে যখন মা-সন্তানের সম্পর্ককে পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র বন্ধন হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তখন টাঙ্গাইলে এক মায়ের অমানবিকতা পুরো দেশকে কাঁদিয়েছে। নিজের চার মাসের অবুঝ সন্তানকে মাত্র ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিলেন এক মা! সেই টাকায় কিনেছেন নাকের নথ, পায়ের নুপুর, মোবাইল ফোন আর জুতা!

ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের মধুপুর পৌর শহরের পুন্ডুরা শেওড়াতলা এলাকায়।

এই পাষণ্ড মায়ের নাম লাবনী আক্তার লিজা। দুই বছর আগে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয়ের পর বিয়ে হয়েছিল রবিউল ইসলামের সঙ্গে। সংসারে অভাব ছিল, কলহ ছিল, কিন্তু তা বলে একজন মা কীভাবে নিজের রক্তমাংসের সন্তানকে বিক্রি করতে পারেন?

জানা গেছে, গত ১০ এপ্রিল সিরাজগঞ্জের এক ব্যক্তির কাছে মাত্র ৪০ হাজার টাকায় চার মাস বয়সী তামিমকে বিক্রি করে দেন লাবনী। এরপর সেই টাকা দিয়ে নিজের জন্য কেনাকাটা করেন—মোবাইল ফোন, পায়ের নুপুর, নাকের নথ, এমনকি জুতা পর্যন্ত।

স্বামী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘তামিমের জন্মের পর আমরা একটু স্বস্তি পেয়েছিলাম। কিছুদিন আগে লাবনী সন্তানকে নিয়ে তার বোনের বাড়ি যায়। এরপর তাকে অনেকবার অনুরোধ করি ফিরে আসার জন্য, কিন্তু সে ফিরে আসেনি। একসময় সে নিজেই জানায়—সে আমাদের সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছে।’

পাষণ্ড এই মাকে কৌশলে ডেকে এনে স্বামী পুলিশের সহযোগিতা নেন। মধুপুর থানা পুলিশের একটি টিম রাতভর অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে শুক্রবার ভোরে মায়ের কোলেই ফিরিয়ে দেয়।

লাবনী নিজেই স্বীকার করে বলেন, ‘আমার মাথা ঠিক ছিল না। মনির নামে একজনের সহায়তায় শিশুটিকে বিক্রি করি। এটা আমার ভুল হয়েছে, আমি অনুতপ্ত।’

তবে প্রশ্ন থেকে যায়—একজন মা কীভাবে এমন ভুল করতে পারেন? নিজের সন্তানকে পণ্য করে কীভাবে নিজের শখ পূরণে ব্যস্ত হতে পারেন?

মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমরানুল কবীর বলেন, ‘ঘটনার পরপরই আমরা অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করি এবং তার বাবা-মার কাছে বুঝিয়ে দিই।’

সূত্র: ঢাকা মেইল