
বাংলাদেশ ফুটবল দল বিশ্বকাপ বাছাই ম্যাচের প্রস্তুতির জন্য সৌদিতে অনুশীলন করছে। স্পেনিশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার ২৮ জনের দলে নতুন মুখ ৩ জন। নতুন তিন জনের মধ্যে রয়েছেন পুলিশের মিডফিল্ডার কাজেম শাহ। আর দীর্ঘদিন পর জাতীয় ফুটবল দলে দুই ভাই এক সঙ্গে ডাক পাওয়ার কীর্তি গড়েছেন সাদ উদ্দিনের ভাই শেখ জামালের ডিফেন্ডার তাজ উদ্দিন। ঘরোয়া লিগে রেলিগেশন জোনে থাকলেও ব্রাদার্সের ফরোয়ার্ড রাহুল পাঁচ গোল করে জাতীয় দলের কোচের নজর কেড়েছেন।
৩ মার্চ থেকে সৌদির তায়েফে বাংলাদেশ দল অনুশীলন করছে। গত দশ দিন অনুশীলনের পরবর্তী সময়ে ১৬ জন ফুটবলারের মন্তব্য প্রেরণ করেছে বাফুফের মিডিয়া বিভাগ। ক্যাম্পের শুরুর দিকে নতুন মুখের দিকেই বেশি আগ্রহ থাকে মিডিয়ার। বিশেষ করে এবার তাজ উদ্দিন ও কাজেম শাহ’র জাতীয় দল অনুশীলনের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটু কৌতূহল ছিল গণমাধ্যম ও ফুটবলাঙ্গনের। বাফুফে সেই কৌতূহল মিটিয়েছে ১২তম দিনে। সৌদিতে অবস্থানরত টিম ম্যানেজম্যান্টের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, কোচের নির্ধারিত খেলোয়াড়দের মন্তব্যই মিডিয়া বিভাগে সরবারহ করেছে প্রতিদিন। মিডিয়ার অনেক দাবিই কোচ নানা সময় নাকচ করেছেন। এবার সৌদিতে কোনো গণমাধ্যম না থাকলেও মিডিয়ায় ভিডিও বার্তা প্রেরণের ব্যাপারে বেশ কঠোরই ছিলেন কোচ। সেখানে থাকা ফেডারেশনের অন্য কর্মকর্তারা অনেকটাই ছিলেন নিরুপায়।
জাতীয় দলের নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার সাদ উদ্দিন। বড় ভাইকে দেখেই লাল-সবুজ জার্সি গায়ে জড়ানোর স্বপ্ন তাজের। ভাইয়ের মুখে জাতীয় দলের অনেক গল্প শুনলেও নিজের অভিজ্ঞতা একটু ভিন্নই তাজের, ‘ক্লাব ও জাতীয় দলের মধ্যে অনেক ভিন্নতা। অনুশীলন, শৃঙ্খলা থেকে সবই।’ দুই ভাই এক সঙ্গে দেশের হয়ে অনুশীলন করছেন। তাজের স্বপ্ন ভাইয়ের সঙ্গে খেলারও, ‘আমার স্বপ্ন দুই ভাই এক সঙ্গে খেলব। এজন্য অনুশীলনে আমার সেরাটা দিচ্ছি। কোচের নির্দেশনা সম্পূর্ণরুপে পালনের চেষ্টা করছি।’ সাদ উদ্দিন ও তাজ উদ্দিন দুই ভাই-ই ডিফেন্ডার। একই সঙ্গে দুই ভাইয়ের মাঠে থাকা কঠিন। সেটা মেনে তাজ বলেন, ‘ভাইকে বিট করে হলেও খেলতে চাই। তবে ভাই রাইট ব্যাক, লেফট ব্যাক দু’টোই খেলতে পারে। আমি রাইট ব্যাক খেললে ভাই লেফট ব্যাক।’
২৮ জনের প্রাথমিক দলে জামালের পাশাপাশি আরেকজন প্রবাসী ফুটবলার কাজেম শাহ। ক্রিকেটার হালিম শাহ’র ছেলে তিনি। কানাডায় বেড়ে উঠলেও বাংলাদেশের ফুটবল পরিবেশে ভালোই মানিয়ে নিয়েছেন। পুলিশ ক্লাবের হয়ে দুর্দান্ত খেলা কাজেম জাতীয় দলের অনুশীলন বেশ উপভোগ করছেন, ‘এখানকার বিষয়গুলো আমি খুব উপভোগ করছি। প্রতিটি বিষয় মানিয়ে নিয়ে সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করছি।’ বাংলাদেশ পুলিশের রবিউল ছাড়া জাতীয় দলের অন্য সতীর্থদের সঙ্গে তার তেমন সখ্যতা আগে ছিল না। তাই অনুশীলনের পাশাপাশি অন্য ফুটবলারদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন এই মিডফিল্ডার।
জাতীয় দলে ডাক পাওয়া রাহুল সিনিয়রদের ভালোই পরামর্শ পাচ্ছেন। বিশেষ করে তার রুমমেটদের কথা বলেছেন, ‘হৃদয় ভাই ও জনি ভাই আমাকে প্রতিদিনের অনুশীলনের ভুল-ত্রুুটি নিয়ে আলাদাভাবে আলোচনা করে। সবাই আমাকে সহযোগিতা করছে।’ রাহুল লিগের সবচেয়ে তলানির দলের খেলোয়াড়। সেই তলানির দল থেকে জাতীয় দলের অনুশীলনে অনেক তারতম্য। এরপরও তিনি মানিয়ে নিতে পারছেন বলে জানান, ‘ব্রাদার্সের অনুশীলনের সঙ্গে জাতীয় দলের অনুশীলনের অনেক পার্থক্য। আমার সমস্যা হচ্ছে না কারণ বসুন্ধরা কিংসে আমি অনুশীলন করেছি। জাতীয় অনেক খেলোয়াড়দের সঙ্গে তখন ক্লাব পর্যায়ে অনুশীলন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে।’ রাহুলকে বসুন্ধরা কিংস থেকে লোনে নিয়েছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন। নতুন ডাক দুই জনের লক্ষ্য মূল দলে জায়গা করে নেয়া এবং ম্যাচ খেলা। রাহুল অবশ্য তার লক্ষ্য খোলাসা করে বলেননি, ‘ব্যক্তিগত টার্গেট বলতে চাই না। করে দেখাব ইন শা আল্লাহ।’
বাংলাদেশ ফুটবল দল আজ সুদানের বিপক্ষে আরেকটি অনুশীলন ম্যাচ খেলবে। এই সপ্তাহের রোববার একটি ম্যাচ খেলেছিল। ১৭ মার্চ সৌদি থেকে কুয়েতে পৌঁছাবে বাংলাদেশ দল। ২১ মার্চ কুয়েতে ফিলিস্তিনের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। ফিরতি লেগ ২৬ মার্চ ঢাকায় কিংস অ্যারেনায়।