
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি হলো জাকাত। জাকাত শব্দের অর্থ হচ্ছে পবিত্রতা, পরিচ্ছন্নতা, পরিশুদ্ধতা, প্রবৃদ্ধি। আল কুরআনে নামাজের নির্দেশ যেমন ৮২ বার রয়েছে, অনুরূপ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জাকাতের নির্দেশনাও ৮২ বার রয়েছে।
পবিত্র কুরআনে জাকাত আদায়ের নির্দেশ দিয়ে মহান আল্লাহ বলেন, وَ اَقِیْمُوا الصَّلٰوةَ وَ اٰتُوا الزَّكٰوةَ
‘তোমরা নামাজ আদায় করো এবং জাকাত প্রদান করো। (সুরা বাকারা, আয়াত: ১১০)
জাকাত কুরআনে ঘোষিত আল্লাহ প্রদত্ত অকাট্য ফরজ বিধান। কেউ জাকাত অস্বীকার করলে সরাসরি কাফের হয়ে যাবে। স্বয়ং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আল্লাহ রব্বুল ইজ্জত জাকাত আদায়ের নির্দেশ প্রদান করেছেন। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে- خُذْ مِنْ اَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَ تُزَكِّیْهِمْ بِهَا وَصَلِّ عَلَیْهِمْ. আপনি তাদের সম্পদ থেকে সদকা গ্রহণ করুন, যার দ্বারা আপনি তাদেরকে পাক-পবিত্র করবেন। (সুরা তাওবা, ১০৩)
কাকে জাকাত দেয়া যাবে এবং কাকে দেয়া যাবে না এই বিষয়ে ইসলামে স্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া আছে। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে যে ফকির, মিসকিন, জাকাত আদায় কর্মী, নও মুসলিম ও অনুরাগী, দাস-দাসী, ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি, মুজাহিদ ও বিপদগ্রস্ত মুসাফিরকে জাকাত দিতে হবে। জাকাতের অর্থ বা সম্পদ বিতরণের বিষয়ে কুরআনে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
যাদের জাকাত দেয়া যাবে
সুরা তাওবার ৬০ নম্বর আয়াত অনুযায়ী যারা জাকাত পাওয়ার উপযোগী, তারা হলেন:
১. ফকির: যার বেঁচে থাকার মতো সম্বল নেই বা খুব সামান্য।
২. মিসকিন: এমন অভাবী, যার রোজগার তার নিজের এবং তার ওপরে নির্ভরশীলদের অপরিহার্য প্রয়োজন মেটানোর জন্য যথেষ্ট নয়।
৩. জাকাত সংগ্রহ ও বিতরণকাজে নিয়োজিত কর্মচারী, যাদের আমিলিন বলে।
৪. নব্য মুসলিম যার ইমান পরিণত হওয়ার পথে আছে অথবা ইসলাম গ্রহণ করতে ইচ্ছুক কোনো অমুসলিম।
৫. মুক্তিপণ ধার্যকৃত দাস বা রিকাব।
৬. ঋণী ব্যক্তি যিনি জাকাতের অর্থে ঋণ পরিশোধ করতে চান।
৭. আল্লাহর পথে ইসলামের প্রচার ও প্রতিষ্ঠার কাজে সক্রিয়ভাবে নিয়োজিত ব্যক্তি (মুজাহিদ)।
৮. বিপদগ্রস্ত মুসাফির।
যাদের জাকাত দেয়া যাবে না
নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক, যে ব্যক্তি অন্যূন ৮৫ গ্রাম সোনা বা ৫৯৫ গ্রাম রুপার সমপরিমাণ নগদ অর্থ বা সমমূল্যের দ্রব্যসামগ্রী বা বাণিজ্য পণ্যের মালিক, তাকে জাকাত দেয়া যায় না। এমন ব্যক্তির জাকাত গ্রহণ নিষেধ। নিসাব পরিমাণ সম্পদের অধিকারীকে জাকাত দিলে আদায় হবে না।
নির্দিষ্ট আত্মীয়: কেউ তার আপন মা, বাবা, মাতামহ, মাতামহী, পিতামহ ও পিতামহী এবং তাদের পিতা-মাতাকে জাকাত দিতে পারবে না। একইভাবে নিজের ছেলে, মেয়ে, নাতি ও নাতনি এবং তাদের সন্তানদে জাকাত দেয়া যায় না। আবার স্বামী স্ত্রীকে জাকাত দিতে পারবেন না। স্ত্রী স্বামীকে জাকাত দিতে পারবেন না।
সেবার প্রতিদান: পারিশ্রমিক হিসেবে কাউকে জাকাত দেয়া যায় না ।
কর্মচারীর মজুরি: গৃহভৃত্য বা অন্য কোনো কর্মচারীকে মজুরি হিসেবে জাকাত দেয়া যায় না। অবশ্য মজুরি ছাড়া উপহার হিসেবে তাদের জাকাত দেয়া যায়।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |