
খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় এক তরুণীকে ছয় যুবক মিলে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়া ভুক্তভোগী তরুণী বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বর্তমানে তিনি খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে ভুক্তভোগীর বাবা ছয়জনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন খাগড়াছড়ি সদরের একটি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আরমান হোসেন (৩২), সদস্য ইমন হোসেন (২৫), এনায়েত হোসেন (৩৫) এবং শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন (৩২)। বাকি দুই আসামি ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মুনির ইসলাম (২৯) ও ছাত্রদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো. সোহেল ইসলাম (২৩) এখনো পলাতক।
তবে এ বিষয়ে খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম এন আবছার দাবি করেছেন, অভিযুক্তরা দলের সক্রিয় কর্মী নয়। তিনি বলেন, “আমরা ভুক্তভোগীর চিকিৎসায় সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছি। কিছু আর্থিক সহায়তাও দেওয়া হয়েছে। অপরাধীদের গ্রেপ্তারেপ্রশাসনের সঙ্গে আমরা সমন্বয় করছি। এটি রাজনৈতিকভাবে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার ষড়যন্ত্র।”
স্থানীয় সূত্র, পুলিশ এবং মামলার তথ্যমতে, সম্প্রতি রথযাত্রা উপলক্ষে আয়োজিত এক মেলায় অংশ নিতে গিয়ে তরুণী ধর্ষণের শিকার হন। রাতে বাড়ি ফেরার পথে তিনি তার কাকার বাড়িতে রাত্রিযাপন করছিলেন। সেখানেই রাতের আঁধারে ছয় যুবক হানা দেয় এবং ‘অবৈধ সম্পর্ক’ এর অভিযোগে তরুণীর কাকাতো ভাইকে বেঁধে রাখে। এরপর পালাক্রমে তরুণীকে ধর্ষণ করে এবং ঘটনার ভিডিও করে তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়।
পরদিন বাড়ি ফিরে তরুণী কাউকে কিছু না বলে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। গুরুতর অবস্থায় তাকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার জ্ঞান ফেরার পর পরিবারের কাছে পুরো ঘটনা খুলে বলেন।সদর হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, “বুধবার রাত ৯টার দিকে পানছড়ি লতিবান এলাকা থেকে একজন কিশোরীকে হাসপাতালে আনা হয়। তিনি বিষক্রিয়ার কারণে কিডনি জটিলতায় ভুগছেন। আমরা প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসা দিচ্ছি।”
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল বাতেন মৃধা বলেন, “ঘটনার বিষয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”