
সাবেক দুই প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) একে এম নূরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়াল বর্তমানে কারাগারে আছেন। বিগত সময়ে হওয়া দুটি জাতীয় নির্বাচনে তাদের ভূমিকা ব্যাপক বিতর্কিত। এবার এই দুই সাবেক সিইসিকে নিয়ে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ।
তিনি বলেছেন, ‘হুদা ও আউয়াল দুজনই শ্রীঘরে। তাদের বিচার দেশের জনগণ চায়। কিন্তু সেই দুটো নির্বাচনকে তো আর ফিরিয়ে আনা বা মেরামত সম্ভব নয়! তবে হ্যাঁ, ভবিষ্যতে যাতে কেউ হুদাই আউয়াল না হয়ে যান, তার জন্য এটি শিক্ষা হতে পারে।’
বুধবার (২৫ জুন) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের এক পোস্টে এ কথা বলেন তিনি।
পোস্টে ফয়েজ আহম্মদ লিখেছেন, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা চরম বিতর্কিত নির্বাচন শেষ করে যেদিন বিদায় নেন সেদিন নির্বাচন ভবনের লনে বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
‘ভবিষ্যতে যেন কেউ হুদাই আউয়াল না হয় তার একটা শিক্ষা হতে পারে’
জাতীয় চার নেতার মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতির বিভ্রান্তি নিয়ে প্রেস সচিবের স্ট্যাটাস
তিনি লিখেছেন, সেই সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা একের পর এক প্রশ্ন করেছেন আর মি. হুদা এবং তার সহকর্মীরা একের পর এক তুড়ি মেরে জবাব দিয়েছিলেন সব প্রশ্নের।
সংবাদ সম্মেলনে কথা স্মরণ করে তিনি আরও লিখেছেন, সেই জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে শেষ প্রশ্নটি আমি করেছিলাম—‘আজকের পর সমাজে পরিবার-পরিজন, আত্মীয়স্বজন নানা সোসাইটিতে নানা মানুষের সঙ্গে আপনাদের দেখা হবে। আপনারা কোনো কারণে নিজেদের মধ্যে বিব্রতবোধ করবেন কি না, যে নির্বাচনব্যবস্থার যে অবস্থা আমরা দেখছিলাম…’। এর জবাবে বিদায়ী সিইসি জোর দিয়ে দুবার বলেছেন, ‘মোটেই না। মোটেই না।’ প্রসঙ্গত বলে রাখি, সেদিন আলাদা সংবাদ সম্মেলনে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন প্রয়াত সাবেক নির্বাচন কমিশনার জনাব মাহবুব তালুকদার। সহকর্মীদের অসহযোগিতার কারণে কিছু করতে না পারার দুঃখ তার মধ্যে ছিল স্পষ্ট।
সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব আরও লিখেছেন, যাই হোক, বিদায় হলো হুদা কমিশন। এলো আউয়াল কমিশন। কাজী হাবিবুল আউয়াল। কথাবার্তায়, আচার-আচরণে জনাব আউয়াল ছিলেন জনাব হুদার তুলনায় অনেক বেশি ব্যক্তিত্বশীল মানুষ। জানাশোনা ও অভিজ্ঞতায় যে তিনি হুদার চেয়ে ভালো, সেটা বুঝতে বেশিদিন সময় লাগেনি। কিন্তু এই আউয়ালই হয়েছিলেন আমি-ডামি ভোটের প্রধান রেফারি। ২০২৪ সালের সাত জানুয়ারি অনুষ্ঠিত এই কলঙ্কিত নির্বাচনের সম্ভবত এক দিন আগে বিদেশি সাংবাদিক ও গুটিকয় হায়ার করা পর্যবেক্ষককে ব্রিফ করার আয়োজন করেছিলেন চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে। সেই সংবাদ সম্মেলনেও আমি উপস্থিত ছিলাম। একটি প্রশ্ন করার সুযোগ পেয়েছিলাম। তাকে জিজ্ঞেস করেছি—আপনি রাষ্ট্রের এই বিপুল অর্থ ব্যয় করে যে নির্বাচনটি অনুষ্ঠান করতে যাচ্ছেন সেখানে কোন দল বিজয়ী হবে তা সবার জানা। কিন্তু বিরোধী দল কে বা কারা হবে, তা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা। একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যেখানে মূল উদ্দেশ্যই বিরোধী দল ঠিক করা, এমন নির্বাচন করতে গিয়ে আপনার কেমন লাগছে? উত্তরে উনি খুব বেশি কিছু একটা বলতে পারেননি… নানা আইন ফাইনের কথা বলে উত্তর এড়িয়ে গেছেন।
সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ লিখেছেন, এখন জনাব হুদা ও জনাব আউয়াল দুজনই শ্রীঘরে। তাদের বিচার দেশের জনগণ চায়। কিন্তু সেই দুটো নির্বাচনকে তো আর ফিরিয়ে আনা বা মেরামত সম্ভব নয়! তবে হ্যাঁ, ভবিষ্যতে যাতে কেউ হুদাই আউয়াল না হয়ে যান তার জন্য এটি শিক্ষা হতে পারে হয়তো।