প্রচ্ছদ জাতীয় কোরবানির ঈদে মাংস: কতটুকু খাবেন, কীভাবে খাবেন?

কোরবানির ঈদে মাংস: কতটুকু খাবেন, কীভাবে খাবেন?

কোরবানির ঈদ মানেই উৎসবের আমেজ, আর এই উৎসবের অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো মাংসের নানা রকম আয়োজন। সুস্বাদু বিরিয়ানি থেকে শুরু করে মাংসের রোস্ট – সব ঘরেই থাকে ভুরিভোজের আয়োজন। তবে এই আনন্দের সময়ে অনেকেই মাংস খাওয়ার পরিমাণ সম্পর্কে সচেতন থাকেন না। ফলে অতিরিক্ত লাল মাংস খেয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন, যা ঈদের আনন্দকে ম্লান করে দিতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, লাল মাংস অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। তবে সঠিক পরিমাণ অনুযায়ী খেলে এবং কিছু সতর্কতা মেনে চললে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা এড়ানো সম্ভব। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্য অনুযায়ী, প্রক্রিয়াজাত মাংস ও লাল মাংস ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, তাই মাংস পরিমিত পরিমাণে খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

মাংসের উপকারিতা: পুষ্টির এক দারুণ উৎস

মাংস যে প্রোটিনের একটি দুর্দান্ত উৎস, তা সবারই জানা। প্রোটিন দেহের কোষ গঠন ও মেরামতে সহায়তা করে। এছাড়াও, লাল মাংস (যেমন ভেড়া, গরুর মাংস, খাসির মাংস) আয়রনের একটি চমৎকার উৎস, যা রক্তাল্পতা প্রতিরোধ করে এবং শরীরের পেশিগুলোতে অক্সিজেন প্রবাহে সহায়তা করে।

সপ্তাহে একবার বা দুইবার লাল মাংস আপনার দৈনন্দিন ডায়েটে রাখা যেতে পারে, এতে শরীরের কোনো ক্ষতি হবে না। মাংসে থাকা উচ্চ প্রোটিন ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে, যার ফলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকে এবং অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকা যায়। গরু ও খাসির মাংসে আরও থাকে:
জিঙ্ক: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
ভিটামিন বি১২: খাদ্য থেকে শক্তি যোগান দেয় এবং স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতায় সহায়তা করে।
সেলেনিয়াম: শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।

ফসফরাস: দাঁত ও হাড়ের শক্তি বাড়ায়।
নায়াসিন (ভিটামিন বি৩) ও ভিটামিন বি৬: শরীরের বিভিন্ন বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
রিবোফ্লেবিন (ভিটামিন বি২): শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে।

কতটুকু মাংস খাওয়া নিরাপদ?

কতটুকু মাংস খাওয়া নিরাপদ?
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন প্রায় ২১ গ্রাম লাল মাংস খান, তাদের তুলনায় যারা দিনে প্রায় ৭৬ গ্রাম লাল এবং প্রক্রিয়াজাত মাংস খান, তাদের অন্ত্রের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (NHS) এর নির্দেশনা অনুযায়ী, যারা নিয়মিত ৯০ গ্রামের বেশি লাল বা প্রক্রিয়াজাত মাংস খায়, তাদের কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকাংশেই বেড়ে যায়।