
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চট্টগ্রামের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। দলীয় নতুন সমীকরণ ও রাজনৈতিক বাস্তবতা বিবেচনায় চট্টগ্রাম-১০, চট্টগ্রাম-১১ এবং চট্টগ্রাম-৪ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম-১০ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন পাট শ্রমিক দলের সভাপতি এবং সদ্য প্রয়াত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমানের ছেলে সাঈদ আল নোমান তুর্য। চট্টগ্রাম-১১ আসনে পুনরায় মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। চট্টগ্রাম-৪ আসনে চূড়ান্ত প্রার্থী হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ আসলাম চৌধুরী।
নানা রাজনৈতিক সমীকরণ এবং দলীয় শীর্ষ নেতৃত্বের আলোচনা বিবেচনায় চট্টগ্রাম-১০ আসনের প্রার্থী পরিবর্তন করা হয়েছে। সাঈদ আল নোমান তুর্য দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় সক্রিয় জনসংযোগ ও সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন। তার এই সক্রিয়তা ও জনপ্রিয়তা প্রার্থী নিশ্চিত করতে প্রধান ভূমিকা রেখেছে বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছেন।
চট্টগ্রাম-১১ আসনে পুনরায় মনোনয়ন পাওয়া আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রাম-১১ আসনে মনোনয়ন পেয়েছিলেন। তিনি ১৯৯১ সালে উপনির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন। ২০১৪ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন বর্জন করেন এবং ২০১৮ সালে বন্দর-পতেঙ্গা এলাকা থেকে অংশ নিয়ে পরাজিত হন।
প্রাথমিকভাবে চট্টগ্রাম-১০ আসনটি আমীর খসরু তার ছেলে ইস্রাফিল খসরুর জন্য চেয়েছিলেন। তবে প্রয়াত নেতা আবদুল্লাহ আল নোমানের ছেলে সাঈদ আল নোমান তুর্য আগে থেকেই ওই এলাকায় সক্রিয় থাকার কারণে তাকে এ আসন দেওয়া হয়। চট্টগ্রাম-১১ আসনে পুনরায় মনোনয়ন দেওয়া হয় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে।
চট্টগ্রাম-৪ আসনে চূড়ান্ত প্রার্থী হয়েছেন মোহাম্মদ আসলাম চৌধুরী। ভাটিয়ারী ইউনিয়নের জলিল গেট এলাকায় নিজ বাড়িতে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি দলীয় মনোনয়নের চিঠি হাতে তুলে নেন। সভায় তিনি নেতাকর্মীদের সব বিভেদ ভুলে ধানের শীষের পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
এর আগে গত ৩ নভেম্বর চট্টগ্রাম-৪ আসনে প্রাথমিকভাবে কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছিল। ১৮ ডিসেম্বর তিনি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। প্রাথমিক প্রার্থী ঘোষণার পর আসলাম চৌধুরীর সমর্থকরা ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন। মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে অবস্থান নেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনায় দলের কয়েকজন নেতা বহিষ্কার হন। এরপর দলের উচ্চ নেতৃত্বের নির্দেশে তিন আসনে চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে।
দলীয় সূত্রের দাবি, এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ আসনে প্রার্থী পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে বিএনপির সাংগঠনিক শক্তি আরও সুসংহত হবে এবং নির্বাচনী মাঠে নতুন গতি আসবে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম-১০ ও চট্টগ্রাম-১১ আসনে সমঝোতার মাধ্যমে দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করা হয়েছে, যা নির্বাচনী প্রস্তুতি ও জনসংযোগকে আরও কার্যকর করবে ।
সূত্র : কালবেলা












































