প্রচ্ছদ জাতীয় ১৯৭৪ সালের ১ টাকা থাকলে যত টাকা পাবেন আপনি, জেনে নিন বর্তমান...

১৯৭৪ সালের ১ টাকা থাকলে যত টাকা পাবেন আপনি, জেনে নিন বর্তমান মূল্য!

একসময় জমিদারদের বিপুল প্রতাপ-প্রতিপত্তি ছিল। তাঁদের মুখের কথাই ছিল আইন, কিন্তু সেকালের কোনো জমিদার জীবনে যে পরিমাণ ‘পয়সা’ দেখেছেন, একালের বহু সাধারণ ভিখারির ঝুলিতেও তার চেয়ে বেশি ‘টাকা’ থাকে। সেকালের পয়সাওয়ালাদের সঙ্গে একালের কোটিপতিদের দূরত্ব এখন নক্ষত্রের সমান। এর প্রধান কারণ হলো সময়ের সঙ্গে টাকার ক্রয় ক্ষমতার ব্যাপক পতন।

সম্প্রতি অর্থ বিভাগের তৈরি করা একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর গত চার দশকে বাংলাদেশি মুদ্রার মান কতটা কমেছে তার এক ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে।

জিডিপি ডিফ্লেটরের ভিত্তিতে অর্থ বিভাগের তৈরি করা ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে-

ক্রয় ক্ষমতা: “১৯৭৪-১৯৭৫ অর্থবছরের এক টাকার ক্রয় ক্ষমতা ২০১৪ সালের ১২ টাকা ৪৫ পয়সার ক্রয় ক্ষমতার সমান।”

অন্যভাবে বলা যায়, ১৯৭৪-৭৫ সালে এক টাকা দিয়ে যা কেনা যেত, এখন সেই পণ্যটিই কিনতে খরচ করতে হবে ১২ টাকা ৪৫ পয়সা। অর্থ বিভাগের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ১৯৭৪-৭৫ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বার্ষিক গড়ে ৭.৩ শতাংশ হারে মূল্যস্ফীতি হয়েছে।

দেশের মূল্যস্ফীতির এই চিত্র নিয়ে সাধারণ মানুষও চিন্তিত। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রফিকুল ইসলামের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলা হয়, ১৯৮৫ সালে ঢাকার সোবহানবাগ থেকে গুলিস্তানের বাসভাড়া ছিল মাত্র ৫০ পয়সা, আর তখন ১ পয়সায় মিলত চকোলেট। পাঁচ পয়সায় কেনা যেত পাঁচটি হজমি বা একটি সাদামাটা আইসক্রিম। এখন সেই হজমির দাম এক পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে এক টাকা।

রফিকুল ইসলাম জানান, ১৯৮৫ সালে তাঁর গ্রামের বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়া পর্যন্ত যেতে লঞ্চের বিলাসবহুল সিটসহ মোট খরচ হতো মাত্র ১২ টাকা, এখন সেই একই পথে খরচ হয় প্রায় ১৭০ টাকা।

টাকার ক্রয়ক্ষমতা কমার পাশাপাশি সরকারি মুদ্রা (১ পয়সা থেকে ২ টাকা পর্যন্ত) বাজারে তার গুরুত্ব হারাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার ১৯৭২ অনুযায়ী, দুই টাকার কয়েন বা নোট পর্যন্ত সরকারি মুদ্রা।

এটি বাস্তবায়িত হলে মুদ্রাবাজারে সরকারি মুদ্রার অংশীদারি ০.৮৩ শতাংশ থেকে বেড়ে প্রায় দেড় শতাংশ হবে এবং সরকারি মুদ্রার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে।