প্রচ্ছদ জাতীয় ১৪৪ ধারা জারি

১৪৪ ধারা জারি

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ শহরে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে শতাধিক ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি হাসপাতাল ও যানবাহন। গত চারদিন ধরে চলা এসব সংঘর্ষের ঘটনায় এলাকাজুড়ে বিরাজ করছে ব্যাপক উত্তেজনা। সর্বশেষ আজ সোমবার সকালেও ঘোষণা দিয়ে তুমুল সংঘর্ষে জড়ায় আনমনু ও তিমিরপুর গ্রামের লোকজন। পরে ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, আজ সকালে উভয় গ্রামের মানুষ সংঘর্ষের প্রস্তুতিমূলক সভা আয়োজন করে। সভা থেকে সংঘর্ষের সময় নির্ধারণ করা হয়। পরে পূর্বঘোষিত সময় অনুযায়ী বিকেল ৩টার দিকে সংঘর্ষে জড়ায় দুই গ্রামের হাজারো মানুষ। এ সময় তাদের হাতে দেশীয় অস্ত্রসহ লাঠিসোটা দেখা যায়। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কয়েক শতাধিক নারী-পুরুষ আহত হয়েছেন। তবে নিহতের খবর পাওয়া যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষের সময় শহরের মধ্যে দুই শতাধিক দোকানপাটে ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। আগুন দেওয়া হয় কয়েকটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে। বিকেল তিনটায় শুরু হওয়া সংঘর্ষ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত চলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যৌথবাহিনী।

এর আগে গত শুক্রবার রাতের সংঘাতের পর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে শহরের পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলেও শনিবার সকাল থেকে আবার উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আনমনু গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নবীগঞ্জ শহর ও আনমনু পয়েন্টে জড়ো হতে থাকলে আতঙ্কে দোকানপাট বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা। এর জেরে শহরে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। রোববার সকালে ও রাতে সংঘর্ষ ও চোরাগোপ্তা হামলা হয়। অবশেষে আজ সোমবার সকালে উভয় গ্রামের লোকজন পূর্বপ্রস্তুতিমূলক সভা করে সংঘর্ষে জড়ায়।

নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা বিষয়টি সমাধানের আহ্বান জানিয়েছি। সংঘর্ষ ও লুটপাটের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি। পুরো বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে রয়েছে। শহরের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে।

প্রসঙ্গত, নবীগঞ্জ উপজেলা গণ অধিকার পরিষদের (জিওপি) সহসভাপতি ও সাবেক যুবলীগনেতা আশাইদ আলী আশা এবং নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও নবীগঞ্জ পৌর বিএনপির সদস্য সেলিম তালুকদারের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সংঘর্ষের সূত্রপাত। ওইদিন বিএনপিনেতা সেলিম তালুকদারের শ্যালক খসরু মিয়া তালুকদারের সঙ্গে জিওপিনেতা আশাইদ আলী আশার কথা কাটাকাটি। একপর্যায়ে তা মারামারিতে রূপ নেয়। সেই জেরে গত চারদিন নানাদিকে মোড় নেয় সংঘর্ষ। পরে তা দুই গ্রামের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।