দেশের তিন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। তিনটি রাজনৈতিক দলের প্রধানই বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। দেশে তাদের অনুপস্থিতিতে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
২০২৪ সালে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে চাপের মুখে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেন। শেখ হাসিনার এই দেশত্যাগের মধ্য দিয়ে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন অধ্যায়ের সূচনা ঘটে। সে সময় রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসেন ড. ইউনূস নেতৃত্বাধীন সরকার।
গত বছরের ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর এখন পর্যন্ত সে দেশেই অবস্থান করছেন শেখ হাসিনা। অন্তর্বর্তী সরকার শেখ হাসিনার পাসপোর্ট বাতিল করা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত দুইবার তার ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছে ভারত সরকার।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থানের সময়ে হত্যাকাণ্ড, গত ১৬ বছরে গুম-ক্রসফায়ার, পিলখানা হত্যাকাণ্ড ও শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড—মোটাদাগে এ কয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এসেছে। শেখ হাসিনা, তার সাবেক মন্ত্রিসভা, বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানসহ অনেকের বিরুদ্ধে মামলা চলমান। এর মধ্যেই গুমের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এদিকে, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীকে ফেরত পাঠাতে ভারতের কাছে বাংলাদেশ চিঠি পাঠিয়েছে বলে গত ২৩ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রকাশ করা প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশজুড়ে বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করা হাসিনা (৭৭) ভারতে থাকলেও তিনি যোগাযোগবিহীন অবস্থায় রয়েছেন। ৫ আগস্ট ভারতের হিন্দন বিমানঘাঁটিতে আসেন তিনি। পরে দিল্লির একটি নিরাপদ বাসস্থানে তাকে সরিয়ে নেওয়া হয় বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার তাকে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায়।
লিভার সিরোসিস, কিডনি সমস্যা, হৃদ্রোগসহ বিভিন্ন জটিল রোগের উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন গিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
গত মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশ থেকে কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে যুক্তরাজ্য যান ৭৯ বছর বয়স্ক খালেদা জিয়া।
বাংলাদেশ সময় বুধবার বিকেলে তিনি লন্ডনে পৌঁছান। পরে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় যুক্তরাজ্যের পশ্চিম লন্ডনে বিশেষায়িত হাসপাতাল ‘দ্য লন্ডন ক্লিনিকে’ ভর্তি করা হয়েছে বিএনপির চেয়ারপারসনকে। সেখানে অধ্যাপক ডা. প্যাট্রিক কেনেডির অধীনে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসা চলছে।
বিমানবন্দর থেকে গাড়ি চালিয়ে মা খালেদা জিয়াকে ক্লিনিকে নিয়ে যান তার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ সময় তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান তাদের সঙ্গে ছিলেন।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে পরের দুই বছর দুই মামলায় দণ্ডিত হয়ে তিনি পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত কারাগারে বন্দী ছিলেন। নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত হলেও পরের চার বছরের বেশি সময় হাসপাতালে কাটে নানা রোগে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার। বারবার আবেদনেও আওয়ামী লীগ সরকার চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর অনুমতি দেয়নি। ২০১৭ সালের জুলাইয়ে সর্বশেষ তিনি বিদেশ গিয়েছিলেন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পরের দিনই তার সাজা মওকুফ করেন রাষ্ট্রপতি। তবে নিজেকে নির্দোষ দাবি করা খালেদা জিয়া আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। এক মামলায় খালাস পেয়েছেন। অন্যটিতে তার সাজা স্থগিত হয়েছে আপিল বিভাগে। এর মাধ্যমে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার যোগ্য হয়েছেন তিনি।
কুয়েত ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের আমির ডা. শফিকুর রহমান কুয়েত সফর করছেন। বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকালে কুয়েত এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে কুয়েত বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি।
কুয়েত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে ডা. শফিকুর রহমানকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কুরআন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র কুয়েত কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি খতিব হাফেজ মাওলানা নুরুল আলমসহ সংগঠনের নেতারা।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৫টায় আরদিয়া সানাইয়ার টেন্টে (খেমায়) প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে প্রীতি সমাবেশে ডা. শফিকুর রহমান যোগদান করেন। এছাড়াও বিভিন্ন সভা-সেমিনারে কথা বলেন ডা. শফিকুর রহমান।
শনিবার আমিরে জামায়াত পবিত্র ওমরাহ পালনের জন্য মক্কার উদ্দেশে গিয়েছেন। তিনি ওমরাহ পালন শেষে রোববার (১২ জানুয়ারি) ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হবেন।
সুত্রঃ ইত্তেফাক
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |