
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ রাহুল দাউদের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়াসহ তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অপর দুইজন হলেন—রাহুল দাউদের শ্যালক (সামিয়ার ভাই) ওয়াহিদ আহমেদ এবং তার বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমা।
দুই দফায় মোট ৯ দিনের রিমান্ড শেষে বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। পরে তারা স্বেচ্ছায় ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে সম্মত হলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করেন।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম জুনায়েদের আদালতে আসামি সাহেদা পারভীন সামিয়া ও ওয়াহিদ আহমেদের এবং ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কামাল উদ্দীনের আদালতে মারিয়া আক্তার লিমার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আদালত তিনজনকেই কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে, গত ১৫ ডিসেম্বর ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলাম আসামিদের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে ২০ ডিসেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সিদ্দিক আজাদ দ্বিতীয় দফায় চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর আনুমানিক ২টা ২০ মিনিটে মতিঝিল মসজিদে জুমার নামাজ শেষে প্রচারণা কার্যক্রম শেষ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে যাওয়ার পথে পল্টন থানাধীন বক্স কালভার্ট রোডে শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলা চালানো হয়। অভিযোগ অনুযায়ী, পিছন থেকে অনুসরণকারী একটি মোটরসাইকেলে থাকা ফয়সাল করিম মাসুদ রাহুল দাউদ ও তার সহযোগী অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি চলন্ত অবস্থায় হত্যার উদ্দেশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করে পালিয়ে যান।
গুলিবিদ্ধ অবস্থায় শরিফ ওসমান হাদিকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সযোগে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় ১৪ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের বাদী হয়ে পল্টন থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। প্রাথমিকভাবে মামলায় দণ্ডবিধির ১২০(বি), ৩২৬, ৩০৭, ১০৯ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। পরবর্তীতে তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০ ডিসেম্বর আদালত মামলায় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা (হত্যা) সংযোজনের আদেশ দেন।
সূত্র : বিডি২৪লাইভ













































