প্রচ্ছদ জাতীয় ‘হাতে যা আছে, তা নিয়ে পথে নামুন…’, সরকার পতন ঘটানোর ডাক হাসিনার

‘হাতে যা আছে, তা নিয়ে পথে নামুন…’, সরকার পতন ঘটানোর ডাক হাসিনার

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জেলা গোপালগঞ্জে অশান্তির পর অডিও দেশবাসীর উদ্দেশে বার্তা দিলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ডাক দিলেন প্রতিরোধ গড়ে তোলার। বললেন, ‘‘যা আছে, তা নিয়েই এখন পথে নেমে পড়ুন। ঘরে বসে থাকার সময় আর নেই।’’ গোপালগঞ্জের ঘটনার তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার।

বুধবার বাংলাদেশের সদ্যপ্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল এনসিপি গোপালগঞ্জে জুলাই পদযাত্রার আয়োজন করেছিল। তাকে কেন্দ্র করে অশান্তি ছড়ায়। দিনভর দফায় দফায় অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি। হামলা, ভাঙচুর থেকে শুরু করে অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটে। গুলিও চলে বেশ কয়েক রাউন্ড। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত হামলাকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা প্রায় ৫০। কিন্তু হাসিনা তাঁর অডিয়োবার্তায় অন্তত সাত জনের মৃত্যুর কথা বলেছেন।

অডিয়োয় হাসিনা বলেন, ‘‘গোপালগঞ্জে এনসিপি গন্ডগোল করেছে। ১৫ জনের গুলি লেগেছে। সাত জন নিহত। কেউ কেউ বলছে, মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেশি। যাঁরা প্রাণ হারালেন, আমরা তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করছি। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। গোপালগঞ্জে এখনও অত্যাচার চলছে। নির্যাতন চলছে। বুধবার এমন একটা ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটাল ওরা। সাতটা প্রাণ ঝরে গেল! আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য দেশের মানুষের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি। ঘরে বসে থাকার সময় আর নেই। যা আছে, তা নিয়েই এখন পথে নামতে হবে। এদের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে।’’

গোপালগঞ্জের ঘটনায় ইতিমধ্যে ২৫ জনকে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশের পুলিশ। হামলাকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে তাদেরও অনেকে আহত হয়েছেন। এনসিপি-র অভিযোগ, হাসিনার আওয়ামী লীগ এবং নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সদস্যেরা এই অশান্তি করেছেন। তাঁদের পদযাত্রায় হামলা চালানো হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে গোপালগঞ্জে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কার্ফু জারি করেছে প্রশাসন।

ইউনূস যে তদন্ত কমিটি গড়ে দিয়েছেন, তার মাথায় আছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি। এ ছাড়া, কমিটিতে থাকছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রক এবং আইন ও বিচার মন্ত্রকের অতিরিক্ত দুই সচিব। দু’সপ্তাহের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই কমিটি রিপোর্ট জমা দেবে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, গোপালগঞ্জে অশান্তি হতে পারে, এমন গোয়েন্দা তথ্য তাঁদের কাছে ছিল। কিন্তু তা যে এত বেশি পরিমাণে হবে, তা বুঝতে পারেননি কর্তৃপক্ষ। দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।