প্রচ্ছদ ধর্ম ও জীবন হজে গিয়ে মৃত্যু হলে আছে যে বিশেষ মর্যাদা

হজে গিয়ে মৃত্যু হলে আছে যে বিশেষ মর্যাদা

ধর্ম ও জীবন: সামর্থ্যবান প্রত্যেকের জন্য জীবনে একবার হজ করা ফরজ। খোদ রাসুলুল্লাহ (সা.) ও জীবনে তিনবার হজ পালন করেছেন। এরমধ্যে দুটি ছিল হিজরতের আগে এবং একটি হিজরতের পর। এই হজের (শেষোক্ত) সঙ্গে তিনি ওমরাও পালন করেছেন। (তিরমিজি, হাদিস: ৮১৫) অন্যদিকে, হজ মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে সর্বোত্তম আমলের একটি। হাদিসে এসেছে, আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) কে জিজ্ঞাসা করা হলো- সর্বোত্তম আমল কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ঈমান আনা। জিজ্ঞাসা করা হলো, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহর পথে জিহাদ করা। জিজ্ঞাসা করা হলো, তারপর কোনটি? তিনি বলেন, হাজ-ই-মাবরূর (মাকবুল হজ্জ)। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৪২৯)

হাদিসে হজ আদায়কারী ব্যক্তিকে আল্লাহর মেহমান হিসেবেও উদ্ধৃত করা হয়েছে। আবূ হুরায়রাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন- আল্লাহর প্রতিনিধি বা মেহমান হলো তিন ব্যক্তি। গাজী (ইসলামের জন্যে সশস্ত্র যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী), হাজী ও ওমরা পালনকারী। (মেশকাত, হাদিস: ২৫৩৭) অন্যদিকে, পবিত্র হজ পালনের ক্ষেত্রে বান্দার জন্য রয়েছে বিশেষ সওয়াব। সেই সঙ্গে আগের সমস্ত গুনাহ মাফ হয়ে যাওয়ার কথাও হাদিসে এসেছে। আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, যদি কেউ হজ করে এবং তাতে কোনোরূপ অশ্লীল ও অন্যায় আচরণ না করে, তবে তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হয়। (তিরমিজি, ৮০৯)

আবার হজে পালনে গিয়ে মৃত্যু হলেও বান্দার জন্য আছে বিশেষ মর্যাদা। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি হজ, ওমরা অথবা আল্লাহর পথে জিহাদের উদ্দেশে বের হবে, আর পথেই মৃত্যুবরণ করবে, আল্লাহ তা’আলা তার জন্য গাজী, হাজী বা ওমরা পালনকারীর সাওয়াব ধার্য করবেন। (মেশকাত, হাদিস: ২৫৩৯) অপর বর্ণনায় এসেছে, ইবনু আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার এক ব্যক্তি আরাফাতের ময়দানে রাসুলুল্লাহ (সা.) এর সঙ্গে ‘উকুফ’রত ছিল। হঠাৎ সে তার বাহন থেকে নিচে পড়ে গেলে ঘাড় মটকে সে মারা যায়। রাসুল (সা.) কে তা অবহিত করা হলে তিনি বললেন, তাকে কুলপাতা মিশ্রিত পানি দিয়ে গোসল দাও, তার দুই কাপড় দিয়েই তাকে কাফন করাও, তাকে সুগন্ধি লাগিও না এবং তার মাথাও আবৃত করো কেননা, মহান আল্লাহ তা’আলা তাকে কেয়ামতের দিন তালবিয়া পাঠরত অবস্থায় উঠাবেন। (ইবনু মাজাহ, হাদিস: ৩০৮৪, সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৭৬৩)

এ ছাড়াও হজে যাওয়ার পর কেউ মক্কায় মারা গেলে সাধারণত তাকে কাবা শরিফের পার্শ্ববর্তী জান্নাতুল মুয়াল্লাতে আর যারা মদিনায় মারা যান তাদের মসজিদে নববি সংলগ্ন জান্নাতুল বাকিতে দাফন করা হয়। এরমধ্যে জান্নাতুল বাকিতে নবীজির সন্তান, স্ত্রীসহ অসংখ্য সাহাবায়ে কেরাম শুয়ে আছেন। সুতরাং উপরোক্ত বিষয়গুলো ছাড়াও হজে গিয়ে মারা গেলে এই বিশেষ মর্যাদা তো থাকছেই।