
দেশজুড়ে: সকাল থেকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গের সামনে বসে আছেন মিমি খাতুন। কখন তাঁর স্বামী মিলন হোসেনের লাশ আনা হবে, সেই অপেক্ষা করছেন তিনি। তাঁর পাশে বসে আছেন স্বামীর বোন সেলিনা খাতুন। দুজনই বিলাপ করছেন আর জানতে চাইছিলেন কখন মিলনের লাশ আসবে।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় পদ্মা নদীর চর থেকে মিলন হোসেনের লাশের ৯ টুকরা চারটি স্থান থেকে উদ্ধার করা হয়। গত শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে গতকাল শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত পদ্মার চরে অভিযান চালিয়ে এসব টুকরা উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, চাঁদার দাবিতে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাবেক সহসভাপতি এস কে সজিবের নেতৃত্বে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। পুলিশ সজিবসহ পাঁচজনকে আটক করেছে।
গতকাল বেলা ১১টার দিকে একটি ভ্যান হাসপাতালের ফটক দিয়ে ভেতরে ঢুকে। এক নারী বলতে থাকেন, ওই যে লাশ আসছে। বসে থাকা মিমি ও সেলিনা দৌড়ে সেদিকে যান। এরপর ভ্যানের পেছন পেছন ছুটেন। একপর্যায়ে ভ্যানের কাছে পৌঁছে চিৎকার করে কাঁদতে থাকেন তাঁরা। নিহত মিলনের বোন সেলিনা খাতুন একপর্যায়ে অচেতন হয়ে মাটিতে পড়ে যান। একটু পর জেগে বলতে থাকেন, ‘আমার ভাই কই?’
স্ত্রী মিমি খাতুন ‘আমি এখন কী নিয়ে বাঁচব? কার কাছে থাকব?’ বলে আহাজারি করছিলেন। মর্গের ভেতরে লাশ নেওয়ার সময় ঢুকতে চান মিমি। তখন একজন তাঁকে বলতে থাকেন, লাশের গন্ধ হচ্ছে, যেতে পারবেন না। কাঁদতে কাঁদতে মিমি খাতুন বলতে থাকেন, ‘গন্ধে আমার কিছু হবে না। স্বামীর লাশটা দেখতে দেন।’
মিমিকে সেখান থেকে নিয়ে সান্ত্বনা দিতে থাকেন বাবা মহিবুল ইসলাম। মহিবুল বলেন, গত রোজার ঈদের কয়েক দিন পর মেয়েকে বিয়ে দিয়েছিলেন। বছরও ঘুরল না। জামাতাকে হারালেন। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চান তিনি।