সাতক্ষীরায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত এক আসামির পরিবর্তে রুহী আকতার স্মৃতি নামে নারীকে আটক করে কারাগারে পাঠিয়েছে তালা থানার সাব-ইন্সপেক্টর মামুন। এ ঘটনায় চারদিন কারাভোগ শেষে বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) জামিনে মুক্তি পেয়েছেন তিনি।
এর আগে ২৩ ডিসেম্বর বিকেলে রুহী আকতার স্মৃতিকে তার বাসা থেকে আটক করে সাব-ইন্সপেক্টর মামুন। এদিকে বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সুপার তাৎক্ষণিকভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।
রুহী আকতার স্মৃতির স্বামীর নাম আরিফুল ইসলাম মালী, বাবা শহর আলী ও মায়ের নাম হালিমা বেগম। অন্যদিকে প্রকৃত আসামি সুমী আক্তারের স্বামীর নামও আরিফুল ইসলাম বিশ্বাস, মায়ের নাম সালমা বেগম।
জানা যায়, তালা উপজেলার বারুইআটি গ্রামের শহর আলীর মেয়ে রুহী আকতার স্মৃতিকে একটি চেক প্রতারণার মামলায় ২৩ ডিসেম্বর বিকেল ৩টায় দিকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে তালা থানার সাব-ইন্সপেক্টর মামুন। গ্রেপ্তারের পর রুহী আকতার স্মৃতিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) কারাগারে থাকা রুহী আকতার স্মৃতির স্বজনরা সাতক্ষীরা আদালত থেকে তাকে জামিনে মুক্ত করে মামলার নথিপত্রে দেখেন, যে মামলায় রুহী আকতার স্মৃতিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ওই মামলার প্রকৃত আসামি তালা উপজেলার আরিফুল ইসলামের স্ত্রী সুমি আক্তার। সুমি আক্তারের বাড়ি বারুইহাটি গ্রামের বিশ্বাস পাড়ায়।
এ ঘটনায় তালা থানার এসআই মামুন বলেন, গ্রেপ্তার করার সময় বা থানায় এসে তাদের পরিবারের কেউ বলেনি আমি সেই আসামি নই। তালা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানও এসেছিলেন তিনিও বলেননি। এখন শুনছি গ্রেপ্তার করা আসামি প্রকৃত আসামি নয়।
গ্রেপ্তার হওয়া নারীর শ্বশুর আব্দুল কাদের মালী জানান, আমরা বারবার বলেছি পুলিশকে সে কোনো এনজিও থেকে লোন নেয়নি। সে কোনো অপরাধী নয়। তবুও বৌমাকে ভাত খাওয়া অবস্থায় ধরে নিয়ে যায়। চারদিন সে বিনা অপরাধে জেল খেটেছে।
মামলার বাদী বেসরকারি এনজিও সংস্থা জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন তালা শাখার ম্যানেজার সৈয়দ ইমারন আলী বলেন, আমি মাত্র এক মাস আগে এই শাখায় যোগদান করেছি। কাগজপত্র না দেখে বিস্তারিত বলতে পারছি না।
এ ঘটনায় তালা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) মোমিনুল ইসলাম জানান, দুইটা চেক প্রতারণার মামলায় তাকে আটক করা হয়। চেয়ারম্যান জাকিরও থানায় এসেছিল। তখন তিনিও তো বলেননি। তাছাড়া তাদের পরিবারের কেউ বিষয়টি জানায়নি। ঘটনাটি আমরা জানার পর বিস্তারিত খোঁজ খবর নিচ্ছি।
সাতক্ষীরা জজ কোর্টের অতিরিক্ত পিপি আব্দুল লতিফ বলেন, এমন ভুল কীভাবে হয়েছে জানি না। যে নামে ওয়ারেন্ট থাকবে পুলিশ সেই নামের ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করবেন। এর বাইরে কিছু হওয়ার সুযোগ নেই।
সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মতিউর রহমান সিদ্দিকী বলেন, বিষয়টি জানা মাত্র তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। অনেক সময় নামের মিল থাকে সেক্ষেত্রে হতে পারে তবে বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখা হবে। যদি পুলিশের কেউ কিংবা অন্য কেউ হয়রানিমূলকভাবে এটি করে থাকে সেটা প্রমাণিত হয় তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |