
বিশ্ববাজারে সোনার দামে নজিরবিহীন উল্লম্ফন দেখা দিয়েছে, যেখানে মূল্যবান এই ধাতুর দাম ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রতি আউন্সে ৪ হাজার ৪০০ মার্কিন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। সোমবার বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, স্পট মার্কেটে সোনার দাম ১.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৪ হাজার ৩৯৭.১৬ ডলারে পৌঁছেছে, যদিও দিনের শুরুতে এটি ৪ হাজার ৪০০.২৯ ডলারের রেকর্ড উচ্চতা স্পর্শ করেছিল। সোনার পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রুপার দামও, যা ৩.৩ শতাংশ বেড়ে আউন্স প্রতি ৬৯.৪৪ ডলারে ঠেকেছে। চলতি বছরে সোনার দাম প্রায় ৬৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ১৯৭৯ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ বার্ষিক লাভের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অন্যদিকে সরবরাহ সীমাবদ্ধতা ও বিনিয়োগকারীদের প্রবল আগ্রহের কারণে রুপার দাম গত বছরের তুলনায় ১৩৮ শতাংশ বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রে সুদের হার কমানোর ক্রমবর্ধমান প্রত্যাশা এবং বৈশ্বিক অস্থিরতার কারণে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সোনার চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। স্টোনএক্সের বিশ্লেষক ম্যাট সিম্পসন মনে করেন, ডিসেম্বর মাস সাধারণত সোনা ও রুপার জন্য ইতিবাচক সময় এবং বছরের শেষে মুনাফা অর্জনের সম্ভাবনা বিনিয়োগকারীদের আরও উৎসাহিত করছে। এছাড়া ডলারের মান কিছুটা দুর্বল হওয়া এবং বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সোনা কেনা অব্যাহত রাখাও এই মূল্যবৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলেছে। কারিগরি বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্ববাজারে সোনার দাম নিকট ভবিষ্যতে ৪ হাজার ৪২৭ ডলার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
আন্তর্জাতিক বাজারের এই অস্থিরতার প্রভাব বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারেও স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দেশের বাজারে টানা কয়েক দফায় দাম বেড়ে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম বর্তমানে ২ লাখ ১৮ হাজার ১১৭ টাকায় দাঁড়িয়েছে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দর। এছাড়া ২১ ক্যারেট ২ লাখ ৮ হাজার ২০২ টাকা এবং ১৮ ক্যারেট ১ লাখ ৭৮ হাজার ৪৫৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিশ্ববাজারে সোনার দাম যেভাবে ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে, তাতে দেশীয় বাজারে খুব শীঘ্রই আরও এক দফা দাম বাড়ার জোরালো সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।













































