প্রচ্ছদ জাতীয় সেই ফ্ল্যাটে এখনো ঘাতকদের অট্টহাসি আর এমপি আনারের কান্না শুনতে পাচ্ছি

সেই ফ্ল্যাটে এখনো ঘাতকদের অট্টহাসি আর এমপি আনারের কান্না শুনতে পাচ্ছি

জাতীয়: ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ড তদন্তে কলকাতায় থাকা ডিবিপ্রধান হারুন অর রুশিদ জানিয়েছন, এমন একটি ঘটনা আমি মেনে নিতে পারছি না। একটি সভ্য সমাজে এত নিষ্ঠুর বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। আমাদের প্রাণবন্ত সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যা করে তার মরদেহ টুকরো করে ঠান্ডা মাথায় গুম করা হয়।

তিনি বলেন, যে আলিশান বাড়িতে হত্যা করা হয়েছিল, আমার মনে হয়, এখনো সেখানে ঘাতকদের অট্টহাসি আর সংসদ সদস্যের কান্না শুনতে পাচ্ছি। এখানে ঘাতকরা অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পনামাফিক কাজ করেছে এবং এই অপরাধকে ভিন্ন ধারায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়েছে।

সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ড তদন্তে কলকাতায় রয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) একটি টিম। ডিবিপ্রধান হারুন অর রুশিদের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে আরো রয়েছেন আব্দুল আহাদ, সাহেদুর রহমান এবং সাহিন ব্যাপারী। রোববার সকালে কলকাতায় পৌঁছেই তদন্তের কাজ করে চার সসদ্যের প্রতিনিধি দল।

সোমবার সকাল ১০টা ৪০ মিনিট নাগাদ নিউটাউনের ওয়েস্টিন হোটেল থেকে বের হন তদন্তকারীরা। সেখান থেকে সঞ্জীবা গার্ডেনসে প্রবেশ করেন তারা। কসাই জিহাদকে সঙ্গে নিয়ে অভিজাত ভবনটির বিইউ ৫৬ নম্বর রুমে যান ডিবিপ্রধান। সেখানে প্রায় ৪০ মিনিট থাকেন তারা। সঞ্জীবা গার্ডেনস থেকে বেরিয়ে সোজা বাগজোলা খালে যান ডিবিপ্রধান হারুন ও অন্য তদন্তকারীরা। খালটিতে যেখানে এমপি আনারের মরদেহের টুকরো ফেলা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে, বৃষ্টির মধ্যেই সেই স্থানটি পরিদর্শন করে তদন্তকারী দল।

এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ বলেন, আমাদের একজন সংসদ সদস্যকে কলকাতায় হত্যা করা হয়েছে। তার ধারাবাহিকতায় আমরা বাংলাদেশে কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছি। তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছি। কলকাতা পুলিশও একজনকে গ্রেফতার করেছে। আপনারা জানেন, এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা হয়েছিল বাংলাদেশ এবং নিষ্পত্তি হয়েছে কলকাতায়। তাই আমরা নিউটাউন থানায় এসে এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে বেশ কিছু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। যে রুমে তাকে হত্যা করা হয়েছিল, সেটিও পরিদর্শন করা হয়েছে।

এমপি আনারের দেহাংশ উদ্ধার ব্যাপারে ডিবিপ্রধান বলেন, মরদেহ উদ্ধারের চেষ্টায় ভারতীয় পুলিশ যথেষ্ট কাজ করছে। আমরা তাদের পাশে রয়েছি। তাদের যে আন্তরিকতা ও একনিষ্ঠ প্রচেষ্টা, তাতে আমাদের আশা, অল্প সময়ের মধ্যেই মরদেহ উদ্ধার করতে পারবো।

তিনি বলেন, আমাদের দুই দেশের পুলিশ কাজ করছে। আমরা অবশ্যই সব অভিযুক্তকে গ্রেফতার করবো এবং তাদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাবো।

এই খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া একমাত্র নারী সিলিস্তি রহমানের ভূমিকা নিয়ে ডিবিপ্রধান জানান, আমরা ভারতীয় অংশে তদন্ত করে দেশে ফিরে তারপরে সিলিস্তি রহমানের সঙ্গে কথা বলবো। যে ফ্লাটে হত্যাকাণ্ড হয়েছিল, সেখানে তিনি ছিলেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে তার কী ভূমিকা ছিল, সেটি কথা বলেই জানা যাবে।

হত্যায় কী ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল সে প্রশ্নের জবাবে ডিবিপ্রধান বলেন, এগুলো নিয়ে কাজ চলছে। আমরা পরে জানিয়ে দেবো।