
গাজীপুরে যৌথবাহিনীর অভিযানে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ও কথিত ‘জুলাইযোদ্ধা’ তাহরিমা জান্নাত সুরভী (২১) গ্রেপ্তার হয়েছেন। বর্তমান সরকারের উপদেষ্টা ও সেনাবাহিনী প্রধানকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যসহ একাধিক গুরুতর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে টঙ্গী পূর্ব থানার গোপালপুর টেকপাড়া এলাকার নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ওই এলাকার সেলিম মিয়ার মেয়ে।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন।
পুলিশ জানায়, কালিয়াকৈর থানায় দায়ের করা একটি মামলায় তাহরিমা জান্নাত সুরভীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। মামলায় চাঁদাবাজি, অপহরণ করে অর্থ আদায় এবং ব্ল্যাকমেইলিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি নিয়মিতভাবে সেনাবাহিনী প্রধানকে লক্ষ্য করে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করতেন বলেও পুলিশের দাবি।
গুলশানের ব্যবসায়ীর কাছ থেকে আড়াই কোটি টাকা আদায়ের অভিযোগ
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি গুলশানের এক ব্যবসায়ীকে জুলাই আন্দোলনসংক্রান্ত মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র প্রায় আড়াই কোটি টাকা আদায় করে। তদন্তে উঠে আসে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া তাহরিমা জান্নাত সুরভীই ওই চক্রের মূল নেতৃত্বে ছিলেন।
পুলিশের তদন্ত অনুযায়ী, এই চক্রটি ইতোমধ্যে বিভিন্ন ভুক্তভোগীর কাছ থেকে ব্ল্যাকমেইল ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে প্রায় ৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
হত্যা মামলার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়
মামলার অভিযোগ সূত্রে আরও বলা হয়, গত বছরের জুলাই–আগস্ট আন্দোলনের সময় গুলশান ও বাড্ডা এলাকায় সংঘটিত হত্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ধাপে ধাপে অর্থ আদায় করা হয়। আসামি বানানো, পুলিশি হয়রানি ও গ্রেপ্তারের ভয় দেখানোর পাশাপাশি ‘মীমাংসা’ করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিপুল অঙ্কের অর্থ আদায় করে চক্রটি।
ভাইরাল পরিচিতিকে কাজে লাগিয়ে প্রতারণা
পুলিশ জানায়, তাহরিমা জান্নাত সুরভী নিজেকে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সমন্বয়ক ও জুলাই আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী হিসেবে পরিচয় দিতেন। তিনি গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল ভিডিও, বিতর্কিত কর্মকাণ্ড এবং নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে লাইভ সম্প্রচারের কারণে তিনি আগেই আলোচিত ছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, নিজের এই পরিচিতি ও প্রভাব ব্যবহার করে তিনি প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তুলতেন এবং পরে ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করতেন।
অভিযান শেষে তাকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে আদালতে পাঠানো হবে।










































