প্রচ্ছদ জাতীয় সুযোগ নিতে পারেন আপা

সুযোগ নিতে পারেন আপা

ডিজাইন মিইয়ে যায় হাওয়ায়। আফসোস হয়- এই ডিজাইন না করলে পাঁচ বছর পর পর ক্ষমতায় আসতে পারতেন। আপনাকে দল ও দেশকে লজ্জায় ডুবিয়ে পালাতে হতো না। এখনো যারা নানা ডিজাইন করছে তাদের ভাবা উচিত দেশের স্বার্থ। নিজের স্বার্থকে পেছনে রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়া উচিত। তা না করে কোনো কোনো দল মনে করছে আমি যা বলি সেটাই করতে হবে। অন্যথায় এটা মানি না। এ গোঁ ধরা তাদের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে- সেটা আপনার পরিণতি দেখেও তারা শিখেনি। এখানেও আপনি সফল। কারণ আপনার দেখানো পথেই হাঁটছে সবাই।

আপা, আপনাকে জানানোর জন্য বলছি, দেশে যে দলগুলোর মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি শুরু হয়েছে তা ভালো লক্ষণ নয়। এর রেশ কোথায় গিয়ে পড়ে আল্লাহ মালুম। আরেকটি সুখবর দেই আপনাকে। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি উঠেছে। কেউ কেউ তো বলছেন পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে তারা নির্বাচনে যাবেন না। আমি মনে করি এমনটা হলে আপনার জন্য বড় সুখবর। কারণ দেশের ত্রিশ ভাগের বেশি ভোট আপনার দলের। আজ না হউক দশ বছর পর হলেও আওয়ামী লীগ অন্যরূপে নির্বাচনে অংশ নেবে। তখন ত্রিশ ভাগ ভোট যদি আপনার দলের বাক্সে যায় তাহলে ৯০টি আসন আপনার নিশ্চিত। আর আপনার সঙ্গীরাও তো রয়েছেই। সারা দেশে তারা সবাই মিলে পাঁচ পার্সেন্ট ভোট পেলে ১৫টি আসন তাদের। এখানেও আপনি এবং আপনার দল এগিয়ে থাকবে। অন্যদিকে যারা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দাবি করছে তারা সারা দেশে কতো পার্সেন্ট ভোট পাবে নিজেরাই জানে না। একমাত্র জামায়াত ভালো সংখ্যক পার্সেন্টেজ পাবে। আমি ভেবে পাই না যারা সারা দেশে এক-দুই পার্সেন্ট ভোট পাবে তারা কেন পিআর পদ্ধতি নিয়ে লাফাচ্ছে? হ্যাঁ, এক-দুই পার্সেন্ট ভোট পেলে তিন থেকে ছয়টি আসন পাবে। এতটুকুই তাদের লাভ। কিন্তু তারা নিজেদের অজান্তেই আপনার দল আওয়ামী লীগের উপকার করে দিচ্ছে সেটি তারা ভাবছেন না।

আপা, আপাগো-জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রায় প্রতিদিনই দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করছে। সেখানেও একেক দলের একেক মত। অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরেও দলগুলো একমতে পৌঁছাতে পারেনি। আর কবে তারা একমতে পৌঁছাবে? না। লক্ষণ বলে একমতে পৌঁছাতে কঠিনই হবে। দলগুলো এখন যে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে তার পরিণতি কি হয় জানি না। তবে, এতসব সংস্কার একসঙ্গে না করে শুধুমাত্র নির্বাচন সংক্রান্ত সংস্কার সম্পন্ন করে নির্বাচন দিলে অনেক ভালো হতো। কিন্তু এ ভালোটা কে বুঝাবে বলুন। আপনার শাসনামলে আপনার অনেক ভুল কাজের সমালোচনা করলে আপনি যেমন ছ্যাঁক করে উঠতেন এখনো এমন দল আছে তাদের ভুলের সমালোচনা করলে ছ্যাঁক করে উঠে। এই ছ্যাঁক করে উঠাটাই ফ্যাসিস্টের আলামত। আর ফ্যাসিস্টের পতন কখনোই কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারে না। প্রকৃতিই ফ্যাসিস্টকে শায়েস্তা করে। শুধু অপেক্ষা সময়ের।

প্রিয় আপা, জামায়াতের মহাসমাবেশ থেকে যে বার্তা দেয়া হয়েছে তা পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করে তুলবে বলে মনে হয়। এটাতেও আপনার লাভ। এখন সামনে শুধু আপনার লাভ আর লাভ দেখছি। এভাবে অপেক্ষা করুন। দেখবেন একদিন আলোর দিশা পাবেন। আরেকটি কথা না বললেই নয়, আপনার পুত্র জয় চব্বিশের আন্দোলনে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ সংবলিত আপনার যে ফোনালাপ তাকে ২০১৪ সালের বলে জানিয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তার মানে জয় বুঝাতে চেয়েছে- সে সময় থেকেই আপনি মানুষ মারার লাইসেন্স দিয়ে দিয়েছেন। আচ্ছা আপা এসব বিষয়ে কী জয় চুপ থাকতে পারে না? নাকি সেও আপনার মতো সকল বিষয়ের বিশেষজ্ঞ? যদি আপনার মতো হয়ে থাকে তাহলে অন্যকথা। না হলে, তাকে বলুন সব বিষয়ে কথা না বলতে। এতে হিতে বিপরীত হয়।

যাকগে আপা, অনেক কথাই বলা হলো। গোপালগঞ্জ থেকে এনসিপির ওপর হামলা, গুলি। পিআর পদ্ধতি, রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব। এসবগুলোর পেছনে তাকালে কেন জানি মনে হয় সবকিছু আপনার মনমতো হচ্ছে। সবশেষে বলবো-আপনি ভালো থাকুন সব সময়। আজ এখানেই রাখছি।

সূত্র- জনতার চোখ