প্রচ্ছদ জাতীয় সরকারি চাকরিতে বড় পরিবর্তন

সরকারি চাকরিতে বড় পরিবর্তন

সরকারি চাকরিতে শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থার ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। এখন থেকে কোনো সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হলে আগে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। অভিযোগকারী যদি নারী হন, তবে কমিটিতে অবশ্যই একজন নারী সদস্য রাখতে হবে।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানায়, ‘সরকারি চাকরি (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ চূড়ান্তভাবে অনুমোদন পেয়েছে।

নতুন এই অধ্যাদেশে বিতর্কিত ‘অনানুগত্য’ এবং ‘চাকরি হতে অপসারণ’ সংক্রান্ত ধারাগুলো বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা বা অন্যকে উসকানোর বিষয়েও আর শাস্তির বিধান থাকছে না।

নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী, কোনো অভিযোগ উঠলে তিন দিনের মধ্যে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। তদন্ত কমিটি ১৪ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন না দিলে তা তাদের ব্যর্থতা হিসেবে ধরা হবে এবং তাদের বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনে (এসিআর) তা লিপিবদ্ধ হবে। প্রয়োজনে এই কারণে কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।

শাস্তিপ্রাপ্ত কোনো সরকারি কর্মচারী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে আপিল করার সুযোগ পাবেন।

এর আগে চলতি বছরের মে মাসে জারি হওয়া এক অধ্যাদেশে সামরিক শাসনামলের মতো সাত দিনের নোটিশে চাকরিচ্যুতির বিধান রাখা হয়। অফিস প্রধানের ‘অসন্তুষ্টি’ বা ‘আদেশ অমান্য’ করার অভিযোগে সরাসরি চাকরি থেকে বরখাস্তের সুযোগ থাকায় তা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।

এই বিতর্কিত অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলন শুরু করেন। এরপর গঠিত পর্যালোচনা কমিটি, আইন বিশেষজ্ঞ ড. আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে কর্মচারী সংগঠনের সঙ্গে আলোচনায় বসে এবং সংশোধনের সুপারিশ করে। ২৬ জুন অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয় এবং দেড় মাসের মধ্যে সরকার তা অনুমোদন করে।

বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-মহাসচিব নজরুল ইসলাম বলেন, “আমাদের দাবি ছিল সামরিক শাসনের সময়কার কালাকানুন বাতিল করা। সরকার আমাদের আপত্তিকে সম্মান জানিয়েছে—এটি অবশ্যই ইতিবাচক পদক্ষেপ। আমরা সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।