বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মারের শাস্তি চায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চারটি সংগঠন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রোববার (১৭ নভেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের (ভিসি) কাছে সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে।
সালাহউদ্দিন আম্মার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ছাত্র। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত পোষ্য কোটা ১ শতাংশ কমিয়ে ৩ শতাংশ নির্ধারণ করে। এরপর সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে এই কোটা বাতিলের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন। তা না হলে অনশন কর্মসূচিতে বসার ঘোষণা দেন তিনি। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ শাখার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক ও স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তিতে কোটাব্যবস্থা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার জন্য গত শুক্রবার সন্ধ্যায় একটি কমিটি গঠন করা হয়। উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীনকে সভাপতি করে ২০ সদস্যের এই কমিটি গঠন করেন উপাচার্য। পরদিনই সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মারের বিরুদ্ধে রাবি অফিসার্স সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোক্তার হোসেন স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ভিসিকে দেয়া হয়। চিঠির অনুলিপি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন), উপ-উপাচার্য (একাডেমিক), প্রক্টর এবং ছাত্র উপদেষ্টাকেও দেয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ১৬ নভেম্বর সকালে অফিসার সমিতির উদ্যোগে রাবি সহায়ক কর্মচারী সমিতি, পরিবহন টেকনিক্যাল সমিতি, সাধারণ কর্মচারী ইউনিয়নের সমন্বয়ে একটি জরুরি সভা হয়েছে। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ১৫ নভেম্বর ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ছাত্র সালাহউদ্দিন আম্মার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও তাদের সন্তানদের নিয়ে অশালীন, অশ্লীল ও কুৎসিত ভাষা প্রয়োগ করেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও তাদের সন্তানদের জন্য অত্যন্ত লজ্জার, মানহানিকর ও অসম্মানের। বিধায় শিষ্টাচার বহির্ভূত এই বক্তব্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার সমিতি, সহায়ক কর্মচারী সমিতি, পরিবহন টেকনিক্যাল সমিতি, সাধারণ কর্মচারী ইউনিয়ন তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছে।’
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘ওই সভায় সকল সমিতির পক্ষ থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার সমিতিকে বক্তব্য দানকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনকে চিঠি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। চিঠি দেয়ার পর দ্রুততম সময়ে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে অফিসার সমিতি, অন্যান্য সমিতি ও ইউনিয়নের যৌথ সভায় পরবর্তী সময়ে কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।’ এ বিষয়ে সালাউদ্দীন আম্মার বলেন, আমার কথা স্পষ্ট, এতে কেউ কষ্ট পেলে আমি আমাকে ক্লিয়ার করতে পারবো যেকোনো জায়গায়। পোষ্য কোটা শুরু করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা যদি পিছিয়ে পড়া বলে মনে হয় তাহলে তাদের বেতন, সুবিধা বাড়িয়ে দেন আমরা কিছুই বলবো না। কিন্তু আমাদের মেধার বিপরীতে তাদের সন্তানদের এই খাপছাড়া সুবিধা মেনে নিবো না আমরা।
তিনি আরও বলেন, গত দুই দিন আগে আমি একটি লাইভে বলেছি যে যদি কোটা নিতেই হয় তবে পোষ্য কোটা নয় আপনারা ভ্যালিড একটা কোটার ব্যানারে যান, হয়তো প্রতিবন্ধী কোটা যদি আপনার সন্তানকে প্রতিবন্ধী মনে হয় আর তাছাড়া ‘বিশেষ ৩য় লিঙ্গ’ কোটা চালু করে সুবিধা নেন আমরা কিছুই বলবো না। তারা হয়তোবা এটাকেই তাদের প্রতি অপমানজনক কথা হিসেবে নিয়েছে। এটা আমার প্রতিবাদের ভাষা। এই ভাষা থেকে লজ্জা পেয়ে হলেও তারা পোষ্য কোটা বাতিলের ব্যাপারে একমত পোষণ করবে বলে আশা রাখছি। অফিসার সমিতি সূত্রে জানা যায়, অভিযোগপত্র প্রদানের পর দ্রুততম সময়ে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে অফিসার সমিতি, অন্যান্য সমিতি ও ইউনিয়নের যৌথ সভায় পরবর্তীতে কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘আমি অফিসার সমিতির চিঠিটা পেয়েছি। এটা আমি রেজিস্ট্রারের কাছে পাঠিয়েছি। তার পরামর্শ অনুযায়ী চিঠির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।’
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |