
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে শিবির সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল থেকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে লড়ছেন আয়েশা সিদ্দিকা মেঘলা। শিবির প্যানেলে প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কারণ, জাকসু নির্বাচনের পরিবেশ, নারী শিক্ষার্থীদের জন্য তার পরিকল্পনা এবং বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে সামগ্রিক ভাবনাসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন জাকসুর এই নারী প্রার্থী।
এত প্যানেল থাকতে শিবিরের প্যানেলে কেন গেলেন—এমন প্রশ্নের জবাবে মেঘলা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে সাড়ে তিন বছর সাংবাদিকতা করেছি এবং এরপর এক বছর অ্যাক্টিভিজম করেছি। কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত না থাকায় একাধিক সংগঠন আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। আমার মনে হয়েছে শিবির সমর্থিত প্যানেলে গেলে আমি ভালো কিছু করতে পারব, শিক্ষার্থীদের কণ্ঠস্বর হয়ে কাজ করতে পারব। তাই শিবিরের প্যানেলে আসা।’
মেঘলা আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরু থেকে দীর্ঘ একটা সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের সঙ্গে সাংবাদিকতা করি। সর্বশেষ সাবেক সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। পরবর্তীতে ধর্ষণবিরোধী মঞ্চে সদস্য এবং যুগান্তর স্বজন সমাবেশের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করি।’
জাহাঙ্গীরনগরে নারী শিক্ষার্থীদের সমস্যা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী থাকার পরেও আমরা দেখতে পাচ্ছি নারীদের মধ্যে নেতৃত্ব দেওয়ার অনীহা রয়েছে। এর মূল কারণ সাইবার বুলিং। আমি নিজেও বারবার সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়েছি। আমি জানি বিষয়টা কতটা প্রভাব ফেলে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী নামে একটা সেল আছে। আমরা এমন একটি সেল তৈরি করার চেষ্টা করব, যেখানে কেউ সাইবার বুলিংয়ের শিকার হলে অভিযোগ দিয়ে বিচার নিশ্চিত করতে পারবে।’
নির্বাচিত হলে তিনি নারী শিক্ষার্থীদের জন্য করতে চান বেশ কিছু কাজ। তিনি বলেন, ‘নির্বাচিত হলে আমি নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি আগে নিশ্চিত করব। আমরা দেখতে পাচ্ছি বেশ কিছুদিন ধরে ছাত্রী হলে চুরির ঘটনা ঘটছে, বহিরাগত প্রবেশ করছে, ক্যাম্পাসের ভেতর হেনস্তার শিকার হচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে যা করলে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সেই পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করব।’
মেঘলা আরও বলেন, নারী শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ‘ডে-কেয়ার সেন্টার’ চালু করতে চাই। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক ছাত্রী আছেন যারা মা। পড়াশোনা এবং মাতৃত্বের মধ্যে যেকোনো একটিকে যেন বেছে নিতে না হয়, তাই আমি একটি ‘ডে-কেয়ার সেন্টার’ চালু করার ব্যাপারে ভাবছি। এছাড়াও ছাত্রী মায়েরা যেন নিরাপদে তাদের বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়াতে পারেন, সে জন্য ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার তৈরির ইচ্ছা আছে।”
মেঘলা যুগান্তরকে আরও বলেন, ‘আমি তো কেবল একটি গোষ্ঠীর প্রতিনিধি হতে আসিনি। আমি সব ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, মতাদর্শের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে উঠতে চাই। জাকসুতে বিভিন্ন মতাদর্শের শিক্ষার্থী মিলে একটি সংগঠন হয়ে কাজ করবে। সবার প্রচেষ্টা থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যাগুলোর সমাধান করতে।
জাকসু নির্বাচন