দেশজুড়ে: শ্বশুর বাড়ির ইফতারি, ডিজিটাল যৌতুক। ভিক্ষা করে ইবাদত করলে ইবাদত কবুল হবে। কিন্তু যৌতুক নিয়ে ইবাদাত করলে সেটা কবুল হবে না। জুলুম কারীর বিচার একদিন হবেই হবে।
রামাদ্বান মাস আসলে সব বাবা মা-দের মাথায় চিন্তা থাকে মেয়ের বাড়ী ইফতারি দিতে হবে (বিশেষ করে আমাদের সিলেট এ এর প্রচলন বেশি)। ছেলের বাবা মা-দের ও আশা থাকে (ছেলের শ্বশুর বাড়ী থেকে ইফতারি খাবো।) ইফতারি দেওয়ার প্রথা বর্তমানে আমাদের সমাজে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও গরীব মেয়ের বাবাদের ঘুম নষ্ট করেদেয় এই প্রথা নামের ব্যাধি। যুগ যুগ ধরে এই অভিচারের বলি হয়ে আসছে মেয়ের অভিভাবক বৃন্দ। অনেক অভিভাবক মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে নিজের জায়গাজমি বিক্রি করে, অথবা বিভিন্ন এনজিও সংস্থা থেকে লোন (কিস্তির টাকা) তুলে এই প্রথা পালন করেন।
রামাদ্বান উপলক্ষে মেয়ের বাড়ীতে ঘটা করে হরেক রকমের খাবার নিয়ে যেতে হয়, যত বেশি নিবে তত বেশি মেয়ের জামাইর মুখ উজ্জ্বল হবে!
সময়মতো ইফতারি দিতে না পারলে মেয়েকে সহ্য করতে হয় মানসিক অত্যাচার, শ্বশুরবাড়ীর লোকেরা তাকে খোঁচা দিয়ে কথা বলে, অনেক শাশুড়ি ও খোটা দেয়! এতে মানসিকভাবে নির্যাতিত হয় সমাজের অনেক মেয়েরা!
বড়লোকদের জন্য তো এসব দেওয়া কোনো ব্যপারই না,বরং তাদের জন্য এটা সুন্দর। কিন্তু এই কুসংস্কারে ভুগতে হয় সমাজের মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের বাবা-মা রা। মেয়ের বাড়ী ইফতারি আম কাঠাল দেওয়ার চিন্তায় তাদের চোখে ঘুম আসেনা, অনেক মহিলারা ভিক্ষা করে মেয়ের বাড়ী ইফতারি দেয়, অনেক বাবা মা রা মেয়ের বাড়ি ইফতারি পাঠানোর জন্যে মানুষের কাছে গিয়ে হাতপাতে, মেয়ের সুখের জন্য!
কাতর হয়ে বলে ইফতারি না পাঠালে মেয়ে শ্বশুরবাড়ি থাকতে পারবে না। মানসিক অত্যাচার সইতে হবে মেয়েটাকে। আরো কত কী!!!
ধিক্কার জানাই সেই সকল শশুর শাশুড়ি দেরকে যারা সামান্য ইফতারি / আম কাঠাল না দেওয়ায় ছেলের বউ কে বিভিন্ন কথাবার্তা বলে বউকে খোচায়,,।
আমরা এমন এক সমাজে বাস করছি যে সমাজে মেয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে টিক মতো আপ্যায়ন না করালে মেয়েকে হজম করতে হয় বাহারি রকমের খোচানি। আমাদের সমাজে রয়েছে শত শত অসহায় বাবা মা যারা নাকি মেয়ের শ্বশুর বাড়ির আবদার মেটাতে না পেরে নিভৃতে চোখের জল ফেলে আফসোস করে।
রয়েছে শত শত বদ শ্বাশুরি যারা নাকি ছেলের শ্বশুর বাড়ি থেকে চাহিদা মত সবকিছু না পেয়ে ছেলের বউকে কটু কথা বলে নির্যাতন করতে দ্বিধাবোদ করে না।
“যেহেতু অনেকাংশে ছেলে পক্ষের চাহিদাই মেয়ে পক্ষকে এসব করতে বাধ্য করে, তাই এসব বন্ধের উদ্যোগ ছেলে পক্ষকেই আগে নিতে হবে। ছেলে পক্ষ থেকে মেয়ে পক্ষকে জানিয়ে দিতে হবে, ইফতারির এই সংস্কৃতি ঠিক না। এটি একটি কুসংস্কার। সামাজিক অনাচার। আপনাদের হয়ত দেয়ার মতো সচ্ছলতা আছে। কিন্তু এখানে সচ্ছলতা থাকা না থাকার প্রশ্ন না; এই যুলুমবান্ধব সংস্কৃতি বন্ধের লক্ষেই আমরা ইফতারি খাবো না ও দিবোনা।
শিক্ষিত-অশিক্ষিত সবার উপর জেঁকে বসা এই কঠিন সামাজিক অনাচার বন্ধে এভাবেই উদ্যোগ নিতে হবে। সর্বত্র সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। আসুন আমরা সবাই ইফতারি নামক কুসংস্কার প্রথার বিরুদ্ধে সোচ্চার হই।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |