রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনটির রেস্তোরাঁ মালিকরা তাদের প্রতিষ্ঠানের ভেতরে জায়গা বাড়াতে গ্যাস সিলিন্ডারগুলো বাইরে রেখেছিলেন। এক সিলিন্ডারে ধারণক্ষমতার বেশি চুলা ব্যবহার করছিল প্রতিষ্ঠানগুলো। গতকাল রোববার রিমান্ডের প্রথম দিনে এমন তথ্য দিয়েছেন মামলার আসামিরা। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে তদন্ত কর্মকর্তারা আরও কিছু তথ্য পেয়েছেন, যেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। রিমান্ডে থাকা ব্যক্তিরা হলেন চুমুক রেস্টুরেন্টের দুই মালিক আনোয়ারুল হক ও শফিকুর রহমান রিমন, কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার জয়নুদ্দিন জিসান এবং ভবনের ম্যানেজার মুন্সি হামিমুল আলম বিপুল। তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রিমান্ডে থাকা আসামিদের কাছ থেকে কাকে, কীভাবে ম্যানেজ করে অবৈধ এ রেস্তোরাঁর ব্যবসা পরিচালনা করা হতো, সেই বিষয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
মামলার তদন্ত-সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার চারজনকে অনেক বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কীভাবে আগুনের সূত্রপাত, কার কার অবহেলা ছিল, আগুন লাগার পর তারা কী করেছে, সেসব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। প্রাথমিকভাবে নিচতলার একটি প্রতিষ্ঠান থেকে আগুন লাগার সত্যতা পাওয়া গেছে। প্রতিষ্ঠান মালিকরা একটি সিলিন্ডার থেকে অনেক চুলা ব্যবহার করতেন। এই কারণে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আর সিলিন্ডারগুলো নিরাপদে না রাখার বিষয়ে তারা বলছে, ভেতরে জায়গা বাড়ানোর জন্য সিলিন্ডারগুলো রাখা হয় বাইরে। ভবন ম্যানেজমেন্টও এসব বিষয়ে চুপচাপ ছিল। রমনা বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, রিমান্ডে আমরা অনেক তথ্যই পাচ্ছি। তাদের দেওয়া তথ্যগুলো যাচাই করা হচ্ছে। আমরা যেসব তথ্য পাচ্ছি, সেগুলো আদালত ও পরে যারা তদন্ত করবে, তাদের জানাব। সে অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে রমনা থানায় পুলিশের করা মামলাটির তদন্তভার সিআইডিকে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রমনা বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন। তিনি জানান, গতকাল পুলিশ সদর দপ্তর থেকে মামলাটি সিআইডিতে স্থানান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনটিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে আহতদের মধ্যে বর্তমানে পাঁচজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে তিনজন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এবং দুজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই পাঁচজনের মধ্যে তিনজন এখনো শঙ্কটাপন্ন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে শঙ্কটাপন্ন তিনজন হলেন রাকিব (২৫), মেহেদী হাসান (৩৫) ও তার স্ত্রী সুমাইয়া আকতার (২৫)। তাদের শ্বাসকষ্টসহ বেশ কিছু জটিলতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। অন্যদিকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি জুবায়ের আহামেদ (২৫) ও ইকবাল হোসেন (২৩) অনেকটা সুস্থতার দিকে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল সার্জন তরিকুল ইসলাম। এদিকে শনিবার মধ্যরাতে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহসহ প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে কেএম মিনহাজ উদ্দিন (২৫) নামের একজনের লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। লাশ হস্তান্তরের তথ্যটি জানিয়েছেন রমনা মডেল থানার এসআই রাজিব হাসান। অন্যদিকে সংবাদকর্মী অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর পরিচয় সংক্রান্ত জটিলতায় লাশ হস্তান্তর করা যাচ্ছে না। আর অন্য এক লাশের নেই দাবিদার। দুজনের মরদেহ পরে আছে মর্গের হিমঘরে।
প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও জনপ্রিয় সাইট থেকে হুবহু কপি করা। তাই দায়ভার মুল পাবলিশারের। এরপরও কোন অভিযোগ বা ভিন্নমত থাকলে আমাদেরকে জানান আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সমাধান করে নিতে। |