
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনে বিজিতদের একাংশ বনভোজনের আয়োজন করেছে। শনিবার সন্ধ্যা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবাশ বাংলাদেশ মাঠে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন চলছে। এতে ছাত্রদল, বামজোট সমর্থিত প্যানেল, সাবেক সমন্বয়কের প্যানেলসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা অংশ নিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে পরিচিতি পর্ব, খেলাধুলা, নাচ-গান, সেলফি তুলে উৎসবের আমেজ নিয়ে আসেন প্রার্থীরা। আয়োজকরা জানান, অনুষ্ঠানের চারটি মূল লক্ষ্য রয়েছে। প্রথমত, রাকসু নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান; দ্বিতীয়ত, তাদের কাজের গঠনমূলক সমালোচনা; তৃতীয়ত, রাকসুকে কোনো দল বা মতের উদ্দেশ্যস্বার্থ থেকে মুক্ত রাখা এবং চতুর্থত, দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কল্যাণে সক্রিয় অবস্থান ধরে রাখা।
আয়োজনে অংশ নেওয়া ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলের ভিপিপ্রার্থী শেখ নূর উদ্দীন আবীর বলেন, ‘আমরা পরাজিত হলেও এখনও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেকহোল্ডার। আমাদের একটি উদ্দেশ্য, যারা বিজয়ী হয়েছেন তারা যেন মেয়াদকালে তাদের ইশতেহারগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করেন। সেজন্য তাঁদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা এবং তদারকি করার দায়িত্ব আমরা যারা হেরেছি তাঁদের সবার। শ্রদ্ধেয় বড় ভাই জাহিদ বলেছিলেন যে, আমরা যেই বিজয়ী হই আমরা সকলে একসঙ্গে কাজ করব। তিনি যেন তার কথা রাখেন সেই আহ্বান রইল। তারা যদি তাদের ইশতেহার ও প্রতিশ্রুতি থেকে এক বিন্দু বিচ্যুত হন, আমরা সকলে একসঙ্গে তাঁদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনব।’
স্বতন্ত্র এজিএসপ্রার্থী শাহ পরাণ লিখন বলেন, ‘আমরা যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি তাদের সবারই ক্যাম্পাস নিয়ে স্বপ্ন ছিল। আমরা যে হেরে যাওয়ার কারণে হারিয়ে যাইনি, সেই স্বপ্ন থেকে বিচ্যুত হয়নি তা জানান দিতেই আজকের এই আয়োজন। বিজয়ীরা আগামীতে ক্যাম্পাসে তাঁদের চিন্তাভাবনা বাস্তবায়নে আমাদের সহযোগিতা পাবে। তবে তাঁরা বিপথে গেলে যে একচুলও ছাড় পাবে না, তাও আমরা জানিয়ে দিচ্ছি এই আয়োজন থেকে।’
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার ৩৫ বছর পর রাকসু, হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে রাকসুর ২৩টি পদের মধ্যে ভিপি ও এজিএসসহ ২০টি পদেই জয়ী হয়েছে ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল। ১৭টি হল সংসদের শীর্ষ (ভিপি, জিএস, এজিএস) ৫১ পদেও জিতেছেন ছাত্রশিবিরের প্রার্থীরা। আর সিনেট ছাত্র প্রতিনিধির পাঁচটি পদের মধ্যে তিনটিতে তারাই জয়ী হয়েছে। রাকসুর বাকি তিন পদের মধ্যে জিএস পদে ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ প্যানেলের সালাহউদ্দিন আম্মার, ক্রীড়া ও খেলাধুলা সম্পাদক পদে ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলের মোছা. নার্গিস খাতুন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক পদে তোফায়েল আহমেদ তোফা জয় পেয়েছেন। এবারের নির্বাচনে সব পদে ৯০২ জন প্রার্থী অংশ নিয়েছিলেন। ছাত্রীদের পাঁচটি হলের ছয় পদে কেউ ফরম তুলেননি। এছাড়া হল সংসদে ৪২ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন।
সূত্র: বিডিটুডে